৩ বছর পর কিশোরগঞ্জের ভৈরব আশুগঞ্জ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মেঘনা নদীর উপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত এক্সপানশন জয়েন্ট প্রতিস্থাপন কাজ শুরু হয়েছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে। সম্পন্ন হতে আগামী ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত কাজ চলবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নরসিংদী অঞ্চলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাজিব কুমার দাসের উপস্থিতিতে কাজ শুরু করেন ইঞ্জিনিয়ারসহ কর্মকর্তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সেতু রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নরসিংদী অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মহিবুল্লাহ সুমন, ইঞ্জিনিয়ার মনিরুজ্জামান ও ইঞ্জিনিয়ার আসিফ।
জানা যায়, মেঘনা নদীর উপর ১ হাজার ২শ মিটার দৈর্ঘ্য (১.২ কি.মি.) এবং ১৯.৬০ মিটার প্রশস্ত সেতুটি ৬৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯৯ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে ২০০২ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
শুরুতেই সেতুটির নাম বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য মৈত্রী সেতু নামকরণ করলেও পরবর্তীতে শেখ হাসিনা সরকার সেতুটির নামকরণ করেন জাতীয় ৪ নেতার অন্যতম নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে। আরও জানা যায়, প্রতিদিন সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কয়েকশ বাস, ট্রাক, পিকআপ ও মাইক্রোবাস ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে থাকে।
দীর্ঘ ২০ বছর পর সেতুটির চারটি জয়েন্টের রাবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয় চালকদের। এতে অনেক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে অনেক চালক ও যাত্রীরা। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেতুটির ক্ষতিগ্রস্ত জয়েন্ট রাবারে পিচ ঢালাই দিয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে মেরামত করেন।
তিন বছর আগে সেতুটির ৪টি জয়েন্টের রাবার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল সেতুটি পরিদর্শন করেন। সকল প্রক্রিয়া শেষে তিন বছর পর ক্ষতিগ্রস্ত এক্সপানশন জয়েন্ট প্রতিস্থাপন কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে কাজ চলাকালীন সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। ৪-লেনের পরিবর্তে ২-লেনে (উভয়মুখী) যান চলাচল করবে।
অতিরিক্ত মালবোঝাই যানচলাচলের কারণে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নরসিংদী অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মহিবুল্লাহ সুমন।
এ বিষয়ে ইঞ্জি. আসিফ জানান, ভৈরব ব্রিজে ক্ষতিগ্রস্ত এক্সপানশন জয়েন্টের জন্য অনেক এক্সিডেন্ট ও যান চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যান চলাচলের যেন কোন বিঘ্ন না ঘটে সেদিকে খেয়াল রেখে ক্ষতিগ্রস্ত ৪টি জয়েন্টকে ৮টি ভাগে কাজ করা হবে। যান চলাচলে ৪ লেনকে ২ লেনে রূপান্তর করে ক্ষতিগ্রস্ত এক্সপানশন জয়েন্ট প্রতিস্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নরসিংদী অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাজিব কুমার দাস বলেন ঢাকা সিলেট জাতীয় মহাসড়কের ভৈরব সেতুটি ঢাকা থেকে ৭২ কিলোমিটারে অবস্থিত।
২০০২ সালে ব্রিজটি উদ্বোধন হওয়ার পর ব্রিজের জয়েন্টে লাগানো যুক্তরাজ্যের রাবার বেয়ারিং প্লেট সমপ্রতি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন যতগুলো এক্সপানশন জয়েন্ট প্রতিস্থাপন হবে সেগুলো ফিঙ্গার টাইপ এক্সপানশন জয়েন্ট। একলেকটিক লি. নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আড়াই কোটি টাকার বিনিময়ে কাজটি পেয়েছেন।
এর আগে ব্রিজটি বিদেশি একটি কোম্পানি করেছিল সেজন্য সরকারিভাবে অনেক নিয়ম মেনে কাজটি করা হচ্ছে। ব্রিজের এক পাশে ১৫ দিন ও অপর পাশে ১৫ দিনসহ মোট ১ মাসে কাজটি সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
টিএইচ