চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ ইউনিয়নের ভাটরা গ্রামে স্ত্রী ফারহানা বেগম পান্নাকে (২৪) নির্যাতন ও পেটে লাথি মেরে হত্যার দায়ে স্বামী মো. শাহজাহান প্রধানকে (৪৩) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা জজ) জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী এই রায় দেন।
হত্যার শিকার ফারহানা বেগম পান্না একই ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ীর মো. আলী আকবর পাটওয়ারীর মেয়ে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শাহজাহান প্রধান ভাটরা গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ীর মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ফারহানা ও শাহজাহানের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবন ভালই চলছিল। ঘটনার সময় তাদের মাহবুব (৩) নামে পুত্র ও মীম নামে দেড় বছর বয়সী কন্যা সন্তান ছিল। ঘটনার কিছুদিন পূর্ব থেকে শাহজাহান সৌদি আরব যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে পিতার বাড়ী থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। ২০০৯ সালের ৭ জুন বিকেলে নিজ বসতঘরে শাহজাহান আবারও যৌতুকের জন্য কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে শারিরীক নির্যাতন ও তলপেটে লাথি মারে। তাৎক্ষণিক ফারহানা মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে এবং অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ফারহানার ভাই ফারুক আহম্মদ পাটওয়ারী বাদী হয়ে শাহাজাহান প্রধানকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে ওই মামলাটি ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে দায়ের হয়। বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন সিআইডি চাঁদপুরের তৎকালীন সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীরকে। তিনি তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৭ মার্চ শাহজাহানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষি ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবদুল মান্নান খান মহিন।
কেএস