মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪
ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

চবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় আহত ৪

চবি প্রতিনিধি

চবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় আহত ৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) জিরো পয়েন্ট এলাকায় গত রোববার রাতে ককটেল বিস্ফোরণ ও বিভিন্ন দোকানে হামলা চালায় যুবলীগ নেতা হানিফের অনুসারীরা। সাথে জড়িত হয় বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

সোমবার (২১ অক্টোবর) ফজরের নামাজের পর শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ স্বরূপ জিরো পয়েন্টে জমায়েত হয়। এরপর রেলক্রসিং অভিমুখে তারা প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায়। পরে সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় মসজিদের মাইকে আন্দোলনরতদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে স্থানীয়দেও প্রতিরোধের ডাক দেয়। এরপরে হানিফের অন্য বাহিনী বন্দুক, শর্টগান ও ককটেল সহযোগে আক্রমণ চালিয়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

এতে একজন গুরুতর আহতসহ চারজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

আহতরা হলেন-  আধুনিক ভাষাবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইয়াসিন আরাফাত, আরবি সাহিত্য বিভাগের ২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নাজমুল হাসান, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মোনায়েম শরীফ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল্লাহ আল নোমান। এরমধ্যে, ইয়াসিন আরাফাত চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতাল এবং নাজমুল হাসান চবি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চবি সমন্বয়ক মুহাম্মদ আলী বলেন, গত রাতে হানিফবাহিনী ক্যাম্পাসের আশেপাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং রাতে জিরো পয়েন্ট এবং রেলক্রসিংয়ের দিকে পাহারা দেয়। শিক্ষার্থীরা ফজরের নামাজের পর প্রতিবাদ করতে গেলে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে এবং পিস্তল উঁচিয়ে গুলি চালায়। 

আবার তারা মাইকে গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের উত্তেজিত করে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা এখনও ক্যাম্পাস এবং আশেপাশে দখলে নিতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, পুলিশ প্রশাসন এখানে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। আমি ওসিকে ফোন দিলে, তারা মাত্র ৩ জন পুলিশ পাঠিয়েছে। যেখানে ৫০ জন সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাচ্ছে, সেখানে ৩ জন পুলিশ কি করতে পারবে?

চবির আরেক সমন্বয়ক ইসহাক হোসাইন ওসির বিরুদ্ধে সরাসরি সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করার অভিযোগ তুলেন। তিনি বলেন- এই ওসি সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করার বিষয়ে আমাদের কাছে একাধিক তথ্য আছে। তিনি সন্ত্রাসী হানিফের কাছ থেকে টাকা খায়। আর এভাবে সন্ত্রাসী হানিফ ক্যাম্পাসের আশপাশ ও ফতেয়াবাদে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর দ্বন্দ্বে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ কমরন। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা হল থেকে বের হয়ে রেলক্রসিংয়ের গেলে তারা আবার ককটেল বিস্ফোরণ করেন। এ সময়ে পুলিশের সহযোগিতা তেমন পায়নি। 

এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অসহযোগিতার অভিযোগ করছে সেটা সঠিক নয়। আমরা ৬টা ১৮ মিনিটে খবর পেয়েছি এবং ৬টা ২৬ মিনিটে রেল ক্রসিংয়ের এখানে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়েছিল তাদেও নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। যাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের কোনো ঝামেলা না হয়। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য সবরকম সহযোগিতা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি এখন শান্ত।

টিএইচ