চট্টগ্রামের আনোয়ারায় এসেছে রং-বেরঙের নানা প্রজাতির অতিথি পাখি। এসব পাখি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমন আকর্ষণীয় তাদের খুনসুটি। পুরো এলাকা পরিণত হয়েছে অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্যে। শুধু শীত এলেই দেখা মেলে এদের। এদের আগমন শীতপ্রধান দেশ থেকে।
আনোয়ারা উপজেলার সুদীর্ঘ ১০ কিলোমিটারের সাগর উপকূল ছাড়াও কোরিয়ান ইপিজেডের বিভিন্ন লেকে দেখা মিলছে এসব পাখির। তাছাড়াও উপজেলা পরিষদের পুকুর, সুরুত বিবির দিঘী, মনু মিয়ার দিঘী, কালা বিবির দিঘী, খাসখামা দিঘী, গুজরা দিঘী, পদ্ম পুকুরসহ উপজেলার প্রাচীনতম ও বৃহত্তম দিঘী-জলাশয়গুলোয় এবং দেয়াঙ পাহাড়ের গাছ-গাছালিতে পাখির মেলা বসেছে।
প্রতিবছর শীত এলেই বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি পাখিরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে আসে এসব দৃষ্টি নন্দন স্থানে। এখানে এসে তারা প্রকৃতিকে সাজায় নতুন রূপে। অতিথি পাখির আগমন ঘিরে প্রকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়।
প্রতিবছর শীত এলেই সাগর উপকূল, পারকি সৈকত, কোরিয়ান ইপিজেড ও বিভিন্ন লেক ও দিঘী-জলাশয়ে সাদা বক, কবুতর, পানকৌড়ি, সাগর কৈতর, পাতিহাঁস, বালিয়া, গাংচিল, ঘুঘু, সারস, রাতচোরাসহ নানা প্রজাতির হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমনে পাখি প্রেমিক ও পর্যটকদের মন খুশিতে ভরে যায়।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে অতিথি পাখির দল। সন্ধ্যা নামলেই দেয়াঙ পাহাড় ও দিঘি-জলাশয়ের পাড়ে গাছ-গাছালিতে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। প্রাণি বিজ্ঞানীরা বলেন, বাংলাদেশে ৭৪৪ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এর মধ্যে ৩০১টি বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করে বলে এদের আবাসিক পাখি বলা হয়। শীত সময় এলেই নিয়মিতভাবে আসে ১৭৬ প্রজাতির পাখি। যা বাংলাদেশের অতিথি পাখি হিসেবে পরিচিত।
এ দেশে অতিথি পাখিদের আগমন ঘটে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি-এই দুই মাসে বেশি পাখি আসে এ দেশে। এসব অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখর হয়ে উঠে প্রকৃতি। মার্চ ও এপ্রিলে তারা তাদের নির্দিষ্ট স্থানে চলে যায়।
প্রতিবছর শীতকালে শিকারিদের ফাঁদে পড়ে অতিথি পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে দাবি পাখি প্রেমিকদের। পাখিদের আবাসস্থলের পরিবেশ সুস্থ ও সুন্দর রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কোরিয়ান ইপিজেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মুশফিকুর রহমান। এক্ষেত্রে তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতাও কামনা করেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে উপজেলায় অতিথি পাখির বিচরণ দেখা যায়। এসব পাখি শিকার করা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। কেউ যাতে পাখি শিকার করতে না পারে সেজন্য মাঠ পর্যায়ে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।
টিএইচ