পিতা মাতার অভাবের সংসারে শত অনটনেও ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছে তারা। বাবার একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম টিউশনির টাকায় পরিবারের খাবার খরচ, বাসাভাড়া আর ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে নিঃস্ব পিতা। তবুও ছেলেকে মানুষ করার অদম্য স্বপ্ন তাদের। ছেলেও পিতামাতার স্বপ্ন পূরণে সফল হয়েছেন।
বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের উত্তরকাকচিড়া গ্রামের শুভজিত হাওলাদার। তিনি ওই গ্রামের বিপুল হাওলাদারের ছেলে।
শুভজিত পার্শ্ববর্তী মঠবাড়িয়া উপজেলা সদরের কে এম লতিফ ইনিস্টিটিউট থেকে ২০১৯ সালে জিপিএ ৫ পেয়ে এস.এস.সি পাশে করে। পরে ২০২১ সালে ঢাকার নটেরডেম কলেজ থেকে আবারো জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
শুভজিত হাওলাদার বলেন, ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় সৃষ্টিকর্তার কৃপায় শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ বরিশালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার এই সাফল্যের পেছনে সৃষ্টিকর্তার পরে যদি কারোর অবদান থাকে সেটা হলো আমার পরম মা-বাবার। তাদের অনুপ্রেরণা আর সহায়তা না পেলে হয়তো স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যেত।
আমার এই পথচলায় আরো একজন মানুষের অবদান রয়েছে, তিনি হলেন আমার মাসি। আমাকে এই পর্যন্ত পৌঁছাতে নানা রকম চড়াই উতরাই পার করতে হয়েছে।
ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হওয়ার। কিন্তু মা-বাবার ইচ্ছে ছিল আমাকে ডাক্তার বানানোর। কিন্তু গতবছর ১লা এপ্রিল অনুষ্ঠিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার সেই স্বপ্ন এক নিমিষে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়।
শুভজিতের বাবা বিপুল হাওলাদার বলেন, অর্থাভাবে আমি আমার গ্রামের বাড়ি ছেড়ে মঠবাড়িয়ায় ভাড়া বাসা নেই। সেখানে টিউশনি শুরু করি। ওই টিউশনির টাকায় আমার সংসার চলে। ছেলেকে নটরডেমে পড়িয়েছি। স্বপ্ন ছিলো এই অভাবের সংসারে ছেলে যদি একমুঠো রোদ নিয়ে আসে। আমার ছেলে সে স্বপ্ন পুরণ করেছে।
উত্তরকাকচিড়া গ্রামের ইউপি সদস্য সঞ্জীব হাওলাদার বলেন, শুভজিতের বাবার আর্থিক অনটন আমি নিজে দেখেছি। দু‘বেলা ভাত খেতে কষ্ট হয় ওই পরিবারটির। আমি বাধ্য হয়ে ভিজিডির চাল পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তার ছেলে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে শুনে আমরা আনন্দিত।
টিএইচ