শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

আদালতের নির্দেশে ভাবখালী মাদরাসার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

আদালতের নির্দেশে ভাবখালী মাদরাসার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ১২নং ভাবখালী  ইউনিয়ের ভাবখালী মাদরাসার নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মনোনীত প্রার্থীদের চাকরি দেয়ার পক্রিয়া চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির একাধিক অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয়রা।

অভিযোগ উঠেছে-ভাবখালী দাখিল মাদরাসার শূন্য পদে ১জন সহকারী  সুপারিনটেনডেন্ট, ১জন নৈশ প্রহরী, প্যাটার্নভূক্ত নব সৃষ্ট পদে ১জন নিরাপত্তা কর্মী ও ১জন আয়াসহ মোট ৪ জন লোক নিয়োগ করা হবে মর্মে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় গত বছর ১০ নভেম্বর পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। 

যা মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির অন্য সদস্যরা অবগত নয়। তবে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে অনেক শিক্ষিত ছেলে মেয়েরাও নৈশ প্রহরী, নিরাপত্ত্বা কর্মী ও আয়া পোস্টে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। 

কিন্তু মাদরাসার সুপারের নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে অনেক উপযুক্ত ও মেধাবী শিক্ষিতরা চাকরি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও অভিযোগ উঠেছে প্রবেশপত্রে উল্লেখিত পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার আগেই মাদরাসা সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিয়োগ বাণিজে্যর লক্ষে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিকট থেকে আর্থিক লেনদেন করে নিয়েছে। এতে মেধার ভিত্তিতে চাকরিপ্রাপ্তি থেকে মেধাবীরা বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় এলাকাবাসী মাদরাসায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন।

এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন- ১৯৭১ সালে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে বর্তমান সুপার আতাহার আলী মাদরাসার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মাদ্রাসাটি দুর্নীতির আখ্যায় বর্ণিত হয়েছে। বর্তমানে তার অধীনে মাদ্রাসায় যেকোনো কাজে চরম দুর্নীতি হয়ে থাকে।
 
অভিভাবক সদস্য ও এলাকাবাসীর স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদরাসায় চারটি পদে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় অবৈধভাবে। এই চারটি পদে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ আল মামুন সেলিমের যোগসাজসে তাদের পছন্দনীয় ব্যক্তিদের মোটা অংকের নগদ অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন। অথচ ম্যনেজিং কমিটিতে সভাপতি ও সুপারসহ মোট ১০জন প্রতিনিধি রয়েছে। 

ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জুয়েল জানায়- প্রতিষ্ঠানের সুপার আতাহার আলী ম্যামেজিং কমিটির সভাপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরামর্শে চাকরিতে পদ প্রত্যাশী মনোয়ারা দিপালীর নিকট থেকে চাকরি দেয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা গোপন চুক্তিপত্র  করে, নগদ ৫ লাখ, আলী এরশাদের সাথে ১০ লাখ টাকা চুক্তিপত্র করে, নগদ ৭ লাখ ও লাভলী নামের একজনের নিকট থেকে ২ লাখ টাকা গ্রহণ করে তাদেরকে নিয়োগ নিশ্চিত করেছে। 

এভাবে প্রতিটি পদেই মেধারভিত্তিতে নিয়োগ না দিয়ে আগে থেকেই ঠিক করে রাখা প্রার্থীদের দিয়ে শুধু লোক দেখানো নিয়োগের বৈধতা দেয়ার জন্য লোক দেখানোর পরীক্ষার তারিখ দিয়েছে। এভাবে নিয়োগ পরীক্ষা হলে মেধাবীরা বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্খা রয়েছে। 

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে মাদরাসা সুপার আতাহার আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শিক্ষা অফিসারকে নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। ওই অবেধ্য নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করার দাবিতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জুয়েল মিয়া ও মারফত আলী বাদী হয়ে ময়মনসিংহের আদালতে মামলাটি করলে গত বৃহস্পতিবার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।

টিএইচ