শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

আদিতমারীতে ১৩ বছর পর চাকরি ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক

লালমনিরহাট প্রতিনিধি   

আদিতমারীতে ১৩ বছর পর চাকরি ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে হত্যা মামলায় আসামি হয়ে দীর্ঘ ১৩ বছর নানান হয়রানির পর অবশেষে প্রধান শিক্ষকের চাকরি ফেরত পেয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক হিরু।

তিনি উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের আদর্শপাড়া এম এইচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন ২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল মামলায় আসামি হয়ে সাময়িক বরখাস্ত হন।

জানা যায়, ২০১১ সালের ১৮ নভেম্বরে মন্তাজ আলীর মেয়ে রুমি বেগমের প্রেমিক জলধর বর্মন মুসলিম পরিচয় দিয়ে প্রেম করে এবং রাতে রুমি বেগমের সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপ করতে এসে মন্তাজ আলীর কাছে ধরা পড়ে জলধর বর্মন। তার পরের দিন শুক্রবার মন্তাজ গলা কেটে খুন করেন জলধর কে। 

এ ঘটনায় আদিতমারী থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন জলধরের পিতা শ্রী প্রেমানন্দ। এই মামলায় ৯ জুন ১৩ বছর পর রায়ে বাকি ১৪ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। রায়ে ১ নাম্বার আসামি মন্তাজ আলী (ঝগড়ী মন্তাজ) এর যাবজ্জীবন ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এখানে চক্রান্ত করে ওই এলাকার কয়েকজন শিক্ষক, ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ১৪ জনকে আসামি করা হয়। মিথ্যা আসামি করায় মহিষখোচা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোকলেছুর রহমানকেও খালাস দেন আদালত।

এই হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় ৮৮ দিন জেলে থাকায় আব্দুর রাজ্জাক হিরু মাস্টার ২০১২ সালে সাময়িক বরখাস্ত হন।

চলতিবছর ৯ জুন আদালতে বেকসুর খালাস পাওয়ায় ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি পুনরায় আদর্শপাড়া এম এইচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে বহাল হন। তাকে সেই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং এলাকাবাসী ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

এই বিষয়ে পুনরায় বহাল হওয়া আদর্শপাড়া এম এইচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হিরু বলেন, আমার এলাকায় ঝগড়ি মন্তাজের মেয়ের প্রেমিককে হত্যা মামলায় আমাকে মিথ্যা ভাবে ফাঁসানো হয় এবং ৬ নাম্বার আসামি করা হয়। যার কারণে আমি ৮৮ দিন জেল খাটি ও ১৩ বছর নানান হয়রানির শিকার হই। 

জেলা খাটার কারণে আমি সামরিক বরখাস্ত হই যার কারণে ১৩ বছর খোরাকি বেতন পাই। এই ১৩ বছর চাকরি না থাকায় আমি খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে ছেলে মেয়ের লেখাপড়া ও পরিবার চালাই। আশা করি পুনরায় চাকরি বহাল হওয়ায় আমার ১৩ বছরের বেতন-ভাতা সব পাবো।

আদিতমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম আজিজুুল হক বলেন, এখন তার নামে আনিত অভিযোগ আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় পূনরায় তাকে আবার তার পদে বহাল করা হয়েছে। যোগদান করার পর তার ১৩ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়া ব্যবস্থা করা হবে।

টিএইচ