সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

আশাশুনিতে চলছে খেজুর গাছের পরিচর্যা

আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

আশাশুনিতে চলছে খেজুর গাছের পরিচর্যা

সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার গাছিদের মধ্যে শুরু হয়েছে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছ পরিচর্যার হিড়িক। জেলার সবখানেই চলছে এ কর্মযজ্ঞ। শীতের ভরা মৌসুমে রস সংগ্রহের জন্য শীতের আগমনের শুরু থেকেই প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছেন গাছিরা। 

এখনোও শীতের তীব্রতা দেখা না গেলেও এর মধ্যে বেড়েছে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা গ্রাম-গঞ্জের খেজুর গাছের কদর। উপজেলার প্রতিটি মাঠের ক্ষেতের আইলে, রাস্তার পাশে, পুকুরপাড়ে অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছ জেলার অর্থনীতিতে আশীর্বাদ। শীত মৌসুমে রস-গুড় উৎপাদন করে কয়েক মাস স্বাচ্ছন্দ্যে জীবিকা নির্বাহ করেন জেলার অনেক পরিবার। 

তবে, জেলায় এবার খেজুর গাছ সংকটের কারণে প্রতিবছরের মতো এবছর চাহিদা অনুযায়ী রস পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা করেছেন রস সংগ্রহকারিরা। জেলার গ্রামগুলোতে জীববৈচিত্রের সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ খেজুর গাছ সংরক্ষণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে না পারার কারণে সব অঞ্চলে খেজুর গাছ অনেকটা বিলুপ্তির পথে। এতে করে এক সময় খ্যাতি থাকলেও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস ও গুড়। 

গাছি রহমত আলী জানান, শীতকালে আগে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসত গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে। সন্ধ্যাকালীন গ্রামীণ পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠত। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। এখন আর সেটি লক্ষ করা যায় না। 

তিনি আরও জানান, এবার কয়েক শত খেজুর গাছ তুলেছেন তিনি। এখান থেকে রস-গুড়, পাটালি বিক্রি করে ৪/৫ মাস সংসার চলে যাবে তার। এছাড়া গাছ তুলে যেসব খেজুরের পাতা পেয়েছেন। সেগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি খেজুর পাতা দিয়ে আর্কষণীয় ও মজবুত পাটি তৈরি করাসহ তার একটা অংশ বিক্রি করেও টাকা রোজগার করবেন তিনি। তিনি আরও জানান, শীত এলেই আমরা খেজুর গাছ কাটার প্রস্তুতি নেই। 

সচেতন মহল জানান, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে, তাতে এক সময় হয়তো বা আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ থাকবে না। একারণে এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যত্ন নিয়ে বড় করা। 

কৃষি অফিস থেকে গাছিদের মাঠপর্যায়ে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ ও ভালোমানের লালি বা গুড় উৎপাদনের বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হলে ও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করলে এর চাষ বাড়ানো সম্ভব। একই সঙ্গে গাছিদের প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা দিয়ে খেজুর রস আহরণে উৎসাহিত করাও প্রয়োজন বলে সচেতন মহল জানান।

টিএইচ