বান্দরবানে জনগণের স্বার্থে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) চাহিদার ভিত্তিতে সড়ক ও সার্বিক উন্নয়নে ৪শ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এক বছর আগে অনুমোদন পাওয়া এসব প্রকল্পগুলো টেন্ডার প্রক্রিয়ায় না আসায় চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
স্থানীয়রা জানায়, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। জনগণের দুর্দশা লাঘাবে যথেষ্ট আন্তরিক। তাই জনস্বার্থে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় জনদুর্ভোগ লাঘব করতে সরকারি প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকারের সহায়তা কামনা করা হয়। যাচাই-বাচাই করে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অতি প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করে থাকেন।
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে অন্যতম পর্যটন নগরী অপরুপা পাহাড় কন্যা খ্যাত বান্দরবান জেলাটি ইতোমধ্যে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। এছাড়া জেলা জুড়ে পর্যটন খাতে যুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে অন্তত ১ লাখেরও বেশি মানুষ। পর্যটন খাতের উন্নতি আরও বেগবান করতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন একান্ত প্রয়োজন।
এছাড়া গতবছরের আগস্টে বন্যায় জেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর উপজেলার ক্যামলং-কুহালং সড়ক, থানচির বলিপাড়া সড়ক, রুমা সড়ক, রোয়াংছড়ির তারাছা ইউপি সড়কসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ নিয়ে জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কসহ সার্বিক উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বান্দরবানের যাচাই-বাছাই করা ৪শ কোটি টাকার প্রকল্প একনেক থেকে একবছর আগে অনুমোদন পেলেও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় না আসায় জনদুর্ভোগ কমছে না অধিকাংশ বান্দরবানবাসীর।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট সিএইসটির (এডিবি) আওতায় প্রায় ১ বছর আগে লামার ১৪টি সড়ক স্কিম অনুমোদন দেয় একনেক। স্বাভাবিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আরআইডিপি) সিএইসটির অধীনে তিন পার্বত্য জেলায় উন্নয়নের জন্য ৭৩২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়। যার মধ্যে বান্দরবানে ২৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে।
এছাড়া দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
নাইক্ষংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহম্মেদ জানান, আলীকদম-নাইক্ষ্যংছড়ি দুই উপজেলার বর্তমান দূরত্ব প্রায় ৯৫ কিমি। দুই উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলা দুটির মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে বান্দরবন এলজিইডি। ৩৯ কিমি. সংযোগ সড়কটির ৩২ কিমি. সম্পন্ন হলেও বাকি ৭ কিমি. সড়ক সম্পন্ন না হওয়ায় জনদুর্ভোগ কমছে না। এছাড়া এলাকার উন্নয়নে যেসকল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়নে জোর দাবি জানান তিনি।
লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল জানান, উপজেলায় জনদুর্ভোগ নিরসনে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এরই মধ্যে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট সিএইসটির (এডিবি) আওতায় প্রায় ১ বছর আগে লামার ১৪টি সড়ক স্কিমমের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি। তবে এসব প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ার এক বছরেও টেন্ডার প্রক্রিয়ার না আসায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম মজুমদার বলেন, আরআইডিপি এবং সিএইসটি-এডিবি প্রকল্প দুটি একনেকে অনুমোদনের পরই সকল সড়ক পরিদর্শন ও প্রাঙ্কলন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার (প্রকল্প পরিচালক) নিকট পাঠানো হয়েছে। ডিডিআরআরআইপি প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে বন্যা ও অতিবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো টেকসইভাবে পূনর্বাসন করা হবে।
টিএইচ