শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

একযুগ আগের কমিটিতে চলছে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

একযুগ আগের কমিটিতে চলছে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগ

দীর্ঘ একযুগ আগে গঠন করা হয় কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি। এক কমিটিতেই যুগ পার করেছে জেলা যুবলীগ। জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল দায়িত্ব পালন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের। ফলে নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে জেলা যুবলীগ। এরপরও জেলা যুবলীগকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেই। 

অভিযোগ রয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী রাজনীতিতে আধিপত্য ধরে রাখতেই মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা যুবলীগকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেই। তবে কমিটি না হওয়ার জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগ নেতারা দায়ী করছেন কেন্দ্রীয় কমিটিকে। কেন্দ্রের নির্দেশনা না থাকায় একযুগেও নতুন কমিটি করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তারা। 

১২ বছর আগের কমিটি দিয়ে চলছে জেলা যুবলীগের কার্যক্রম। ফলে যেমন নেতৃত্বের সংকট দেখা দিয়েছে, তেমনি যুবলীগের পদ পেতে রাজপথে সক্রিয় নেতাদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা। আদৌ নেতৃত্বের স্বপ্ন পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে আছেন ধোঁয়াশার মধ্যে।

জানা গেছে, ২০১২ সালের জুলাই মাসের ৩ তারিখ আমিনুল ইসলাম বকুলকে আহ্বায়ক, মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল ও রুহুল আমিন খানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।

৯০ দিনের আহ্বায়ক কমিটি বর্তমানে প্রায় এক যুগ পেরিয়ে গেলেও আর জেলা যুবলীগের কমিটি হয়নি। একই অবস্থা উপজেলা যুবলীগের কমিটিগুলোতেও। প্রায় সবগুলো উপজেলাতেই দীর্ঘদিন ধরে নতুন কমিটি নেই। যার ফলে ঝিমিয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রম।

দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়ে এ বছরের ১২ জানুয়ারি যুবলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৬ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে যুবলীগের প্রধান কার্যালয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সর্বশেষ শিক্ষা সনদের ফটোকপিসহ জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়। এর আগে গত ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

তাতেও ওইসময় জেলা যুবলীগের সম্মেলনের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগে নতুন এক চমকের অপেক্ষা করছেন তৃণমূল কর্মীরা। জেলা কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে চলছে শীতল লড়াই। যুবলীগের বর্তমান নেতারা ছাড়াও এ পদ দুটিতে উঠে এসেছে ছাত্রলীগের একাধিক সাবেক নেতাদের নাম। আর পদ প্রত্যাশীদের প্রচার- প্রচারণায় শহরের অধিকাংশ বিলবোর্ডগুলো ছেয়ে গেছে। 

দীর্ঘদিন পর নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হলে পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। তবে এ কার্যক্রম বর্তমানে খানিকটা ঝিমিয়ে পড়ায় আশাহত হয়েছে নেতাকর্মীরা। তবে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের শীর্ষ পদ পাওয়ার জন্য প্রায় ডজন খানেক নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। পদ প্রত্যাশীরা প্রায় সবাই রাজনীতির মাঠে সরব রয়েছেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেক যুবলীগ নেতা জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে কমিটি না দিলে কার্যক্রম অনেকটা পিছিয়ে পড়বে।

নেতাকর্মীরা জানান, দীর্ঘ ১২ বছরেও কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি না হওয়ায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকে যুবলীগে পদের আশায় ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু অপেক্ষার প্রহর শেষ না হওয়ায় এখন তারা আওয়ামী লীগের অন্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে যুক্ত হতে চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগে সক্রিয় হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, এখন যুবলীগের কর্মসূচিতে যেতে মন সায় দেয় না। নিজে কর্মী না নেতা, কাউকে বলতে পারি না।

আরেক নেতা বলেন, জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে ১২ বছর। দীর্ঘ ১২ বছর কিশোরগঞ্জে নতুন কমিটি না থাকার প্রভাব পড়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমে। এখন কাউকে কর্মসূচিতে নেয়া যায় না। দ্রুত কমিটি না দিলে জাতীয় নির্বাচনে মূল দলকে ভুগতে হবে বলে মনে করেন অনেকে। এদিকে জনমনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কে হচ্ছেন কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সম্পাদক।

টিএইচ