নেত্রকোনার কলমাকান্দা-গোবিন্দপুর সড়ক সংস্কার কাজ ধীরগতির ফলে চলাচলকারীদের মধ্যে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এই সড়কটি উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়কে কলমাকান্দা সদর, খারনৈ ও রংছাতি এ তিনটি ইউনিয়নের প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষ চলাচল করে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে এ সড়কের চাঁনপুর মোড় থেকে মাদ্রাসা বাজার পর্যন্ত প্রায় পোনে এক কিমি. সড়কের বিভিন্ন অংশে হাটু সমান পানি থাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। লোকজন ঝুঁকি নিয়ে গাইড ওয়ালের ওপর দিয়ে হেঁটে চলাচল করছে। ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, গত দুই মাস আগে এই সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। পুরাতন ইট ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কোন রকমে ১৫-২০ দিন কাজ করে ঠিকাদার। এ সময়ে চানপুর মোড় থেকে সড়কের দুই পাশে প্রায় ৫০ মিটার গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়। পরে সড়কের পুরাতন ইট তুলে সড়কটি খুঁড়ে রেখে চলে যায় ঠিকাদার। আর এরপর থেকে ওই সড়কে চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সোয়া ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কলমাকান্দা থেকে গোবিন্দপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়। এ কাজ বাস্তবায়ন করছেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার সারওয়ার জাহান নামের এক ঠিকাদার। কাজের শুরুতেই ওই সড়কে পুরাতন ইট ব্যবহার নিয়ে স্থানীয়রা মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে।
পরে তিনি সরেজমিনে গিয়ে এ বিষয়টি ঠিকাদারকে বলা হলে তিনি আবার নতুন ইট দিয়ে কাজ শুরু করেন। কিছুদিন কাজ করার পর আর কোন কাজ না করে ফেলে রাখা হয়। পরে দ্রুত এই কাজ বাস্তবায়নের জন্য উপজেলার প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেয়া হয়।
গত শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চাঁনপুর মোড় থেকে প্রায় ৫০ মিটার সড়কের দুই পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা। তারমধ্যে বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। সম্প্রতি বৃষ্টি হওয়ায় আর সড়কটি খুঁড়ে রাখায় পানিতে ভরে আছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জনিক চক্রবর্তী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সড়কটি খুঁঁড়ে রেখে চলে গেছে ঠিকাদার। এতে করে এই রাস্তায় কোন যানবাহন তো দূরের কথা মানুষজন হেটেও চলাচল করতে পারছে না। অসংখ্য মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
তাছাড়া কাজে ধীরগতির কারণে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ওই সড়কের ঠিকাদার সারওয়ার জাহান জানান, আমি বিয়ে বাড়িতে আছি। আর রাস্তা নিয়ে কি আপনাকে সাক্ষাৎকার দিতে হবে? আপনিই ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী শুভ্রদেব চক্রবর্তী বলেন, দ্রুত এ সড়কের কাজ বাস্তবায়ন করতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। আর ঠিকাদারের গাফিলতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
টিএইচ