প্রতিবছরই আগাম বন্যায় জমির ফসল সঠিক সময়ে কৃষকরা ঘরে তুলতে পারবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। তাই এবার কিশোরগঞ্জের হাওরে আগাম বন্যার পানি থেকে বোরো ধান রক্ষায় ১৭৪ কি.মি. ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। জেলার ইটনা, মিঠামইন,অষ্টগ্রামসহ ৯টি উপজেলায় এসব বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। আগের বাঁধগুলো সংস্কারের পাশাপাশি নতুন বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে হাওরের কৃষক পরিবারগুলো।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওর অঞ্চলের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ/মেরামত কাজ বাস্তবায়নের জন্য চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে কাবিটা নীতিমালা- ২০১৭ মোতাবেক বাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। জেলার ৯টি উপজেলায় ১৪৭টি পিআইসির মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭৪ কি.মি. বাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করা হয়।
ইতোমধ্যে কাজের অগ্রগতি ও মান পরিদর্শনের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে পিআইসিসমূহের কাজ পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে একটি প্রতিনিধি দল হাওরে বাঁধ নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনকালে কাজের অগ্রগতি ও সার্বিক বিষয় নিয়ে এলাকার সুবিধাভোগী কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রতিনিধি দল।
এলাকার লোকজন বাঁধ নির্মাণ কাজের মান নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং চলতি বছরের আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় পিআইসি নির্মিত বাঁধসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাব্যাক্ত করেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মিত বাঁধের কারণে তাদের চলতি বছরের বোরো ফসল নির্বিঘ্নে ঘরে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হাওরের কৃষকরা।
বাঁধ নির্মাণ কাজ পরিদর্শনকালে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল কৃষকরা ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক বাঁধসমূহের প্রতি নজর রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন এবং কাজের মান ও অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ নির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। বাধঁগুলো নির্মাণে তদারকিসহ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, জেলার ৯টি উপজেলায় ১৪৭টি পিআইসি কমিটির মাধ্যমে বাঁধ নির্মিত হয়েছে। গত বছর দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হওয়ায় হাওরের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এলাকাবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে এবার পিআইসির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক জানান, আগাম বন্যা থেকে ফসল রক্ষায় আগের বাঁধগুলো মেরামতের পাশাপাশি নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ফসল রক্ষায় হাওরের চারপাশে বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। তাই আশা করছি, আগাম বন্যা হলেও জমিতে পানি ওঠার আগেই কৃষক তার ধান কেটে গোলায় তুলতে পারবে।
টিএইচ