জেলার কুমারখালী পৌরসভার কুণ্ডুপাড়া মহল্লা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেড়শ বছরের পুরোনো ভবন ব্যবহার করছে পাঁচ শতাধিক মানুষ। এই অর্ধশতাধিক জরাজীর্ণ ভবনে বসবাস করছেন বাসিন্দারা। যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও তা সংস্কারের পদক্ষেপ নেই। হালকা বাতাসেই কেঁপে ওঠে ভবনগুলো।
একাধিক স্থানে ফাটল দৃশ্যমান। বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ে। নষ্ট করে দেয় আসবাব। পরগাছাগুলো দেয়াল ভেদ করে ছড়িয়ে পড়েছে ভবনজুড়ে। দেয়াল, সিঁড়ি, ছাদ ধসে পড়ার উপক্রম। ভবনগুলো আট বছর আগে পরিত্যক্তও ঘোষণা করেছে ভূমি অফিস।
২০১৫ সালে জেলা প্রশাসন থেকে পুরোনো ভবনগুলোর হালচাল জানতে চাইলে ভূমি অফিস সরেজমিন তদন্ত করে ৪৬টি চুন-সুরকির ভবন চিহ্নিত করে। এর মধ্যে ২০টি অর্পিত সম্পত্তি, বাকিগুলো ব্যক্তিমালিকানার। সবগুলো ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো অপসারণের ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে চিঠি দেয়া হলেও কাজ হয়নি। পৌরসভার এ হিসাবের বাইরেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে বেশকিছু।
ভবনের বাসিন্দা বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম বলেন, ২৫ বছর আগে সরকারের কাছ থেকে ভবন লিজ নিয়েছি। এরও অনেক আগে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এখন ঘরের রড বের হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ঘরে পানি জমে। সামান্য বাতাস এলেই ভয় হয় কখন ঘর ভেঙে পড়ে! কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। জীবন হাতে নিয়ে বসবাস করছি এখানে।
আছিয়া খাতুন জানান, পাকিস্তান আমল থেকে বাস করছি এখানে। দোতলা ভবনের জানালা-দরজা অনেক আগেই ভেঙে গেছে। ইট-সুরকি খসে পড়ছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় দুই ছেলে, বউ, নাতিদের নিয়ে বাস করছি।
দেড়শ বছর আগে কুমারখালী পৌরসভার কুণ্ডুপাড়ায় অর্ধশতাধিক ভবন নির্মাণ করে বিত্তশালী কুণ্ডু বংশধররা। স্বাধীন হওয়ার অনেক আগেই তারা দেশ ছেড়ে চলে যায়। এর মধ্যে কিছু বাড়ি সরকারের পক্ষ থেকে লিজ দেয়া হয়েছে। অনেকেই দেশ ত্যাগের আগে বিক্রি করে গেছেন বলে জানিয়েছেন বসবাসকারীরা।
পৌরসভার মেয়র সামছুজ্জামান অরুণ বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার মাইকিং করে ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। নোটিসও দেয়া হয়েছে। এরপরও বাসিন্দারা সরছেন না। অচিরেই পৌরসভার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
টিএইচ