কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে অংশীজনদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার কুমিল্লা সার্কিট হাউস মিলনায়তনে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা সদর আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও কুমিল্লা জেলা পুলিশ পৃথকভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এতে নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, কিশোর গ্যাংয়ে অভিযুক্ত নগরীর কয়েকশ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
কুমিল্লা সদর আসনের এমপি ও মহানগর আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের কোন অস্তিত্ব থাকবে না। কুমিল্লা থেকে কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে সম্মিলিতভাবে কাজ শুরু হবে। যেসব স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়ন দিলে মুচলেকা দিয়ে প্রথমবারের মতো ক্ষমা করে দেয়ার জন্য প্রশাসনকে বলব। তবে যারা মাদক, ছিনতাই ও অস্ত্রবাজিতে জড়িত তাদের মাফ নেই।
নিয়মিত শিক্ষার্থীকে প্রথমবারের মতো সুযোগ দেয়া হবে সংশোধন হতে। তবে দ্বিতীয়বার করলে কোনোভাবে ছাড় পাবে না। এই সুযোগ পিতা মাতাকে কাজে লাগাতে হবে। সবাই মিলে ২০৪১ এর সুন্দর প্রজন্ম উপহার দেই।
সভায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে শিক্ষকদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর একজন আইডল (আদর্শ) হচ্ছেন শিক্ষক। ছাত্র শিক্ষক বন্ধন গড়ে তুলতে হবে। যেন শিক্ষককে শ্রদ্ধা থেকেই ভয় করে শিক্ষার্থীরা অপরাধে জড়াতে না পারে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্য জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা যত কাজ করছি সব সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য। আর সেই সন্তান যদি বিপদগ্রস্ত হয় তাহলে সবই অর্থহীন।
পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি, যেসব শিক্ষার্থী অপরাধে জড়িয়ে বিভিন্ন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত। অনেকে তাদের মায়ের মোবাইল দিয়েই এসব গ্রুপে তথ্য পরিকল্পনা জানাচ্ছে। কিন্তু পিতামাতা সময়মতো তাদের টেককেয়ার করছেন না। সঠিক নিদের্শনা দিচ্ছেন না। আবার অনেকে আদর করে মোবাইল মোটরসাইকেল কিনে দিয়ে বিপথগামী করছেন। অপ্রয়োজনীয় জিনিস সন্তানকে দিবেন না। বিশেষ করে মায়েরা সন্তানের আদর স্নেহের পাশাপাশি শাসন দুটোই করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মংনে থোয়াই মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. মতিউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন, কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেনসহ বিভিন্ন স্কুল প্রধান, জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা।
টিএইচ