কুষ্টিয়া সদরে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবু আহাদ আল মামুনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। তাকে মারধর করে অপহরণের চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ মে) আবু আহাদ আল মামুন বাদী কুষ্টিয়া পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কিশোর কুমার ঘোষ (জগত) কে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে কাউন্সিলর পলাতক রয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করেছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মোহাম্মদ রেজাউল করিম ওরফে রেজাউল পিতা মৃত আব্দুর রহমান সাং চরমিলপাডা। মো. শহীদ পিতা খয়বার আলী, ও গিরিশ শাহিন পিতা আবুল হোসেন সর্বসাং চরমিল পাড়া।
গত সোমবার রাতে কুষ্টিয়ার বড় বাজার বড় স্টেশনের সামনে কবি আজিজুর রহমান সড়কের লিটন খার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৮ মে, প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচনে তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা।
তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুন অভিযোগ করে বলেন, রাতে কুষ্টিয়া শহরের বড় স্টেশন রোডে অবস্থিত আমার নির্বাচনি অফিসে বসেছিলাম। এ সময় কয়েকজন যুবক এসে আমাকে বাইরে আসতে বলে। আমি কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা আমাকে মারধর করে বাইরে টেনে নিয়ে যায়।
বাইরে নিয়ে তারা আমাকে জিজ্ঞেস করে ভোটে কেন দাঁড়িয়েছিস, কে দাঁড়াইতে বলেছে। আমি কিছু বলার আগেই তারা আমার মাথা, বুকে, পিঠে আঘাত করে। আমাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। ঘটনার সময় আমি জগৎ ও হাসিব খাঁর নাম শুনেছি।
এর আগে চেয়ারম্যান প্রার্থী জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আবু আহাদ আলম মামুন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেয়ার অভিযোগ তোলেন। এ বিষয়ে ওই প্রার্থী তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ভয়ে আত্মগোপনে থাকার কথা জানান।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে যারা হামলার সঙ্গে জড়িত তারা দলের বা তার কোনো কর্মী সমর্থক নয় বলে দাবি করেন বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিদ্বন্দ্বী আতাউর রহমান আতা বলেন, মনে হচ্ছে তিনি মার খাওয়ার নাটক করেছেন। তার চশমা ঠিক আছে, মোবাইল হাতেই রয়েছে। তবে কেউ যদি হামলা করে থাকেন তার দায় আমি নেব না।
যিনি আমার বিপক্ষে প্রার্থী হয়েছেন তিনি কোনো শক্ত প্রার্থী নন। তাহলে আমার দলের নেতাকর্মী বা সমর্থকরা কেন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা আমার দলের কেউ নয়, তাদের আমি চিনিও না।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে ছুটে আসি এবং তার চিকিৎসায় সহায়তা করি।
আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। উনিসহ ৭/৮ জন ব্যক্তি একসঙ্গে বসেছিলেন। এ সময় তার ওপর হামলা করা হয়েছে বলে উনি (আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী) জানিয়েছেন। উনি সবাইকে চিনতে পারেন নি। উনি দুয়েকজনের নাম বলেছেন। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি শেখ সোহেল রানা বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিএইচ