চলমান কারফিউর কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় খুলনার আড়তগুলোতে হাজার হাজার মণ আম পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেনা দামে বিক্রির চেষ্টা করলেও ক্রেতা পাচ্ছেন না আড়তদাররা। ফলে মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ফলের মোকাম খুলনা মহানগরীর বড়বাজার। এই বাজারের কদমতলা মোড় থেকে কালিবাড়ী মোড় পর্যন্ত ভৈরব নদের দুপাশ জুড়ে রয়েছে বহু আড়ত। সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন প্রজাতির আম আসে খুলনার বড়বাজারে। খুলনা মহানগরীসহ আশপাশের জেলা-উপজেলার ব্যবসায়ীরা এ মোকামের প্রধান ক্রেতা। কিন্তু কারফিউর কারণে গত চার দিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এখন সম্পূর্ণ ক্রেতাশূন্য এ মোকাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বড়বাজারে ১৭০টি ফলের আড়ত রয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি আড়ত এখন আমের ব্যবসা করছে। এছাড়া অন্য আড়তগুলোতেও পচনশীল মৌসুমি ফলের ব্যবসাসহ পেঁয়াজ, রসুন, আলু, পটোলের ব্যবসা রয়েছে।
আড়তদাররা জানান, বড়বাজারে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার মণ আম বিক্রি হয়। তবে গত চার দিন ধরে বিক্রি নেই। এই চার দিন একটানা কারফিউর কারণে বিক্রি নেমে গেছে শূন্যের কোঠায়। ফলে মজুদকৃত প্রায় ২০ হাজার মণ আমে পচন ধরেছে। পচন ধরা আম ফেলে দিতে হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার সকালে বড়বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান নিরবতা। অধিকাংশ দোকান বন্ধ। কিছু আমের আড়ত খোলা থাকলেও কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন। তবে ছোটখাটো (ফেরিওয়ালা) বিক্রেতা দুই-এক মণ আম কিনছেন।
খুলনা কাঁচা ও পাকা আম আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মোহাম্মদিয়া বাণিজ্যিক ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী রেজাউল করিম পাটোয়ারি মানিক বলেন, একদিন আম বিক্রি না হলেই পচন ধরে যায়। সেখানে একেক আড়তে বেশ কয়েক দিন ধরে আম রয়েছে। তার আড়তে দেড় হাজার মণ অবিক্রিত আম রয়েছে।
এ আমে পচন ধরে গেছে। এসব আম ফেলে দিতে হচ্ছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা খুব কঠিন। তিনি নিঃস্ব হয়ে গেলেন। পাশের ঘোষ ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জিত কুমার ঘোষ জানান, তার আড়তের ৭শ মণ আম পচে যাচ্ছে। এমন সংকটে আগে পড়েননি।
খুলনা কাঁচা ও পাকা আম আড়তদার সমিতির সভাপতি আব্দুর রব মাস্টার বলেন, পচন ধরার কারণে অর্ধেক দামে আম বিক্রি করতে হচ্ছে। তারপরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এ লোকসান কীভাবে কাটিয়ে ওঠব জানি না। তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসলে বহু ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে যাবে।
টিএইচ