খুলনায় আন্তর্জাতিক মানের গম সংরক্ষণের স্টিল সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খাদ্যশস্যের গুণগতমান বজায় রেখে তিন বছর পর্যন্ত গম সংরক্ষণ করা যাবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন।
গত শনিবার খুলনা মহেশ্বরপাশা আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন স্টিল সাইলোর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, এতে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় গম সংরক্ষণ, লোডিং এবং আনলোডিং করা যাবে। ফলে খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। খুলনা ছাড়াও দেশে আরও কয়েকটি অঞ্চলেও একই ধরনের সাইলো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এসময় খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী, আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্পের ম্যানেজার প্রকৌশলী ওমর ফারুক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তাজুল ইসলামসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ সহযোগিতায় আধুনিক গমের সংরক্ষণাগারটি নির্মিত হচ্ছে। হাতের স্পর্শ ছাড়াই প্রযুক্তি মেশিন দ্বারা সম্পূর্ণ এই স্টিল গমের সাইলোর ধারণ ক্ষমতা ৭৬ হাজার দুইশত টন। এ প্রকল্পের ৬টি স্টিল চুল্লির প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা ১২ হাজার ৭০০ টন। প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ করেছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপ।
আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্পের প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান, এই প্রজেক্টের ঠিকাদার হিসেবে জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ করেছে বাংলাদেশি কোম্পানি ম্যাক্স গ্রুপ ও তুর্কি কোম্পানি আল তুনতাস। এই প্রজেক্টে আল তুনতাস স্টিল সরবরাহ করেছে। প্রজেক্টের ৭৫ শতাংশ কাজ দেশি দক্ষ জনবল ও তার নিজস্ব ইকুইপমেন্ট ব্যবহারের মাধ্যমে করেছে ম্যাক্স। আন্তর্জাতিক মানের এ যেটির ৯০ শতাংশ ম্যাটেরিয়াল জার্মান, ইউএসএ, তুরস্ক, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয়েছে।
এছাড়া প্রকল্পে ব্যবহার করা প্রতিটি মেটারিয়ালসের মান যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করেছে দেশে খ্যাতনামা দুটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট এবং খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কুয়েট।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ও ম্যাক্স গ্রুপের প্রকৌশলীদের কাজের মান দেখে সচিব অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। সংরক্ষণাগারে এক সঙ্গে ৭৬ হাজার ২০০ টন গম সংরক্ষণ করা যাবে। যা তিন বছর পর্যন্ত এই গুদামে রাখা যাবে। ম্যাক্স তাদের দক্ষ জনবল ও ইকুইপমেন্ট যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে এ প্রজেক্টটি অত্যন্ত সুন্দরভাবে সমাপ্ত করতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৩৫৫ কোটি ৯১ লাখ ৭ হাজার ৩৮৯ টাকা ব্যয়ে আধুনিক স্টিল সাইলোর নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
টিএইচ