জনবল সংকটে হিমশিম খাওয়া চাঁদপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে নরমাল ডেলিভারিতে প্রায় ৭০ ভাগ সাফলতা অর্জন করেছে। হাসপাতালটিতে গেল বছরে ১৯শ ৫২ জন নরমাল ডেলিভারি আর সিজার হয়েছে মাত্র ৫শ ৩৬ জন।
চলতি বছরের প্রথম মাসেই ২০৫ জন নরমাল ডেলিভারি করাতে সক্ষম হয়েছে হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগ। বিপরীতে মাত্র ৪৩ জন সিজার হয়েছে। প্রসূতি ও গাইনি বিভাগে নতুন করে ছয়জন নার্স যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান।
এছাড়াও চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চার বেডের আইসিও ও শিশুদের জন্য আট বেডের স্পেশাল কেয়ার ফর নিউব্রন ইউনিট চালু হয়। তবে এই দুইটি ইউনিটের জন্য চিকিৎসক, নার্সসহ কোন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে জোড়াতালি দিয়ে চিকিৎসা সেবায় চলছে জেলার স্বাস্থ্য সেবার প্রধান এই কেন্দ্রটি।
হাসপাতালের প্রসূতি ও গাইনি বিভাগের সিনিয়র নার্স মাহমুদ আক্তার জানান, জটিলতা দেখা দিলে সিজার করানো হয়। নতুবা বেশিরভাগ প্রসূতিকে নরমাল ডেলিভারি করানো হচ্ছে। এই হাসপাতালে জেলায় সবচেয়ে বেশি নরমাল ডেলিভারি হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, ২০২২ সালে প্রসূতি ও গাইনি বিভাগে মাতৃমৃত্যুর হার শূন্য। গেল বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জানুয়ারিতে নরমাল ডেলিভারি ১৪৩ জন, সিজার ৫৫ জন। ফেব্রুয়ারিতে নরমাল ডেলিভারি ১৪৮ জন, সিজার ৪২ জন। মার্চে নরমাল ডেলিভারি ১৪৮ জন, সিজার ৪৫ জন। এপ্রিলে নরমাল ডেলিভারি ১৬৩ জন, সিজার ৪৬ জন।
মে মাসে নরমাল ডেলিভারি ১৩২ জন, সিজার ৩০ জন। জুনে নরমাল ডেলিভারি ১৪৮ জন, সিজার ৪৪ জন। জুলাইয়ে নরমাল ডেলিভারি ১৬৩ জন, সিজার ৩১ জন। আগস্টে নরমাল ডেলিভারি ১৬০ জন, সিজার ৫১ জন। সেপ্টেম্বরে নরমাল ডেলিভারি ১৮৯ জন, সিজার ৪৫ জন। অক্টোবরে নরমাল ডেলিভারি ১৭৩ জন, সিজার ৫৯ জন। নভেম্বরে নরমাল ডেলিভারি ২০৪ জন, সিজার ৪২ জন। ডিসেম্বরে নরমাল ডেলিভারি ১৮২ জন, সিজার ৪৬ জন।
প্রসূতি ওয়ার্ডে এসে নবজাতককে নিয়ে ফেরার পথে কবিতা আক্তার বলেন, হাসপাতালে এসে নার্সদের সেবায় সন্তুষ্ট। নরমাল ডেলিভারিতে এখানে প্রসব করানো হয় বলে তিনি এসেছেন। এখন মা ও নবজাতক সুস্থ্য আছেন।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক মো. মাহবুবুর রহমান, প্রসূতি ও গাইনি বিভাগ প্রসঙ্গে বলেন, নার্সদের বিশেষ দক্ষতা হয়ে গেছে। তাই এখানে নরমাল ডেলিভারি বেশি হয়। নার্স সল্পতার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ইউনাইটেড ন্যাশনস পপুলেশান ফান্ড (ইউএনএফএ) সংস্থা থেকে ছয়জন নার্স দেয়া হয়েছে।
শিগগির ওই ছয়জন নার্স প্রসূতি ও গাইনি বিভাগে যুক্ত হবে। তারপর আরো ভালো সেবা দেয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে নার্সসহ তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকটের কথা তুলে ধরেন হাসপাতালের তত্বাবধায়ক।
টিএইচ