‘গাজীপুরের নির্বাচনটা আমাদের কাছে অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এর আগে এতো বড় পরিসরের একটা নির্বাচন জাতীয়ভাবে অনেক গুরুত্ব বহন করবে বলে আমরা মনে করি। এজন্যই গাজীপুর নির্বাচনটা একটা মডেল হোক।’
বুধবার (১০ মে) দুপুরে গাজীপুরের শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার অডিটোরিয়ামে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন,প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা যখন দেখি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আমাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। আমরা কিন্তু তাদের মুখ চেপে ধরতে পারছি না। যদি সম্ভব হতো মুখ চেপে ধরতাম। কিন্তু মুখ চেপে ধরতে পারবো না, পৃথিবীটা এখন উন্মুক্ত। এখন গ্লোবাল ওয়ার্ল্ড।
আমাদের নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা কথা বলছে, যুক্তরাজ্য কথা বলছে, ইউরোপ কথা বলছে, জাপান কথা বলছে এবং ইউনাইটেড নেশন থেকেও কথা বলছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শতসহস্র সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না। নিজের পক্ষে যা করণীয় সে পদক্ষেপ গুলো আপনাদেরকেও নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাঠে যখন খেলা হবে দুই পক্ষকেই খেলতে হবে। আমি যদি কালো টাকা বিতরণ করে থাকি আরেক জনকে কালো টাকা বিতরণ প্রতিহত করার চেষ্টা করতে হবে। নির্বাচন কমিশনার এসে, পুলিশ এসে রাতারাতি সেটা করতে পারবে অনেক ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হবে না। তবে কালো সাংস্কৃতিক থেকে আমাদের ধীরে ধীরে উঠে আসতে হবে। আমাদের নির্বাচনের ব্যবস্থা এখনো অনেক অপসংস্কৃতি ও কালো সংস্কৃতি রয়ে গেছে। আপনাদের চেষ্টায় হয়তো একটা সময় আসবে সবাই সুশৃংখলভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কালো টাকা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবেন না। কালো টাকা যতই বিতরণ করা হোক। যদি মনে করেন কন্ট্রোল করতে পারছেন না। তাহলে কালো টাকা গ্রহণকারীদের বলে দেবেন, কালো টাকা নিলেও নিয়েন ভোটটা কিন্তু স্বাধীনভাবে দিয়েন। আপনি যাকে বিশ্বাস করেন, যাকে ভালো মনে করেন ভোটটা তাকেই দিয়েন। কারণ ভোট প্রদানের সময় তো আর প্রার্থী থাকবে না।’
উপজেলা নির্বাচন অফিসার শেরপুর বগুড়া ও রির্টানিং অফিসারের স্টাফ অফিসার এসএসএম জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই নির্বাচনের আচরণবিধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন জেলা নির্বাচন অফিসার কামরুল হাসান। এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনন্য অতিথিরা প্রার্থীদের থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছেন। এসময় ১, ৩, ৬, ৯, ১৩, ১৮, ২৫, ৩৩, ৪০, ৪৫, ৫২, ৫৫ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল ও মেয়র প্রার্থীরা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অনেক প্রার্থী ভোটারদের এনআইডি কার্ড নিয়ে নিচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটের আগে টাকা দিয়ে ভোট ক্রয় করে। এসব বিষয় দেখার অনুরোধ ও প্রতিকার চায়। এছাড়াও ভয়ভীতি মুক্ত ভোটকেন্দ্র, ১টির অধিক ভোটকেন্দ্র করার দাবি করেন। বৃষ্টির কারণে পোস্টার ছিড়ে যায়, এজন্য তারা পোস্টারগুলো লেমোনেটিং করে প্রচার করার সুযোগ চান। পরে প্রার্থীদের উত্থাপিত সমস্যার বিষয়ে জবাব দেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
গাজীপুর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাদিরুল ইসলাম, মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম। নির্বাচনের অংশ নেওয়া মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
টিএইচ