সারাদেশে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর বাজারের মুদি দোকানগুলোতে নিত্যপণ্যের দামে সামঞ্জস্য নেই। নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকায় মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিয়ন্ত্রণহীন বাজারে গিয়ে অসহায় অবস্থায় ক্রেতারা। বিশেষ করে খেটেখাওয়া মানুষের নাভিশ্বাসের উপক্রম।
জগন্নাথপুর পৌরশহরের প্রধান বাজার জগন্নাথপুর বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন করে পেঁয়াজ, আলুর দাম বেড়েছে। দোকানে দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে মিল না থাকলে যাচাই বাচাই না করে বাধ্য হয়ে বেশি মূল্যে পণ্য ক্রয় করছেন ক্রেতারা। কারণ কোনো দোকানে এক পণ্যের দাম বেশি থাকলে অন্য দোকানে কম। আবার সেই দোকানে অন্য পণ্যের দাম বেশি। বাজার নিয়ন্ত্রণহীন থাকায় নাজেহাল সাধারণ মানুষ।
তবে পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা জানান, নিত্যপণ্যের মান অনুযায়ী দাম কম-বেশি থাকে। এছাড়াও তারা জানান, দাম উঠা-নামা থাকায় আটকে যাওয়া পণ্যের মূল্য একটু বেশি থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
জগন্নাথপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ হালি লাল মুরগির ডিম ৫৫ টাকা। এই বাজারে ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দামে সামঞ্জস্য নেই। পাইকারী দোকানের পাশ্ববর্তী খুচরা দোকানগুলোতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে ও পাইকারী দোকানগুলোতে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু ৪২ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা।
দোকানগুলোতে নিত্যপণ্য পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারী দোকান বাউধরন ভেরাইটিজ স্টোরে প্রতি কেজি ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫৫ টাকা, আলু ৪৫ টাকা ও প্রতি লিটার পিওর সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া জগন্নাথপুর বাজারে অন্য নিত্যপণ্যের মূল্যে অসামঞ্জস্য লক্ষ্যনীয়।
বিভিন্ন দোকানে পামওয়েল প্রতি লিটার ১৪৫-১৬০ টাকা, প্রতি কেজি রসুন ১৭০-২০০ টাকা, চিনির কেজি ১৬০ টাকা, শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত, চায়না আদা প্রতি কেজি ১৭০-২২০ টাকা পর্যন্ত, ব্রয়লার মুরগী প্রতি কেজি ১৬০-১৭০ টাকা। দোকানগুলোতে বিভিন্ন পন্যের মূল্যের সামঞ্জস্য না থাকলেও একমাত্র চায়না মিডিয়াম ডালে সামঞ্জস্য রয়েছে। চায়না মিডিয়াম ডাল প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জগন্নাথপুর বাজারের মহাদেব ট্রেডার্সের পরিচালক অসিত দাশ জানান, কোয়ালিটি অনুযায়ী নিত্যপণ্যের দাম কম-বেশি থাকতে পারে। তাই যে দোকানে পণ্য ভালো সে দোকানে রেট ও একটু বেশি হবে; আর এটা স্বাভাবিক।
মেসার্স তাওহিদা স্টোরের ম্যানেজার মো. ইকবাল হোসেন জানান, ক্রয় অনুযায়ী আমরা নিত্যপণ্যে সীমিত লাভ ধরে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সুনামগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যালয় সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, আমাদের জনবল কম থাকার পরও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান চলছে। এর ধারাবাহিকতায় সমপ্রতি জগন্নাথপুরেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। আগামীতে ও অভিযান চলবে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজেদুল ইসলাম বলেন, আমরা অচিরেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
টিএইচ