হাসাপাতালের শয্যা বেড়েছে। বাড়েনি সেবার মান। চিকিৎসক, কর্মচারী, স্বাস্থ্যসেবার কাজে ব্যবহূত যন্ত্রপাতির সংকটের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ওষুধের সংকট রয়েছে গ্রামীণ জনপদের এই হাসপাতালটিতে। সরকার সাধারণ জনগণের দৌঁড়গড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেয়ার নানা উদ্যোগ নিলেও সংশ্লিষ্টদের খামখেয়ালি আর অব্যবস্থাপনায় চিকিৎসাবঞ্চিত সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে চিকিৎসক, কর্মচারী, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব ওষুধ সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হাসপাতালটি।
ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা পদে পদে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিশেষ করে হাসপাতালটিতে মেডিকেল টেকনোলজিসহ (ল্যাব) প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা দ্বিগুন খরচে বাহিরে করাতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, এ উপজেলার দেড় লাখ বাসিন্দা ছাড়াও পার্শবর্তী রাজনগর, গোলাপগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা ও কুলাউড়া উপজেলার একাংশের বাসিন্দারা জরুরি সেবা নিতে এখানে আসেন। প্রতিদিন আউট ডোরে ৪ থেকে ৫শ রোগীর ভিড় লেগে থাকায় হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। অনেকক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসার জন্যে রোগীদের প্রায়ই রেফার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে নতুন ভবনে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছিল ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সিলেট-৩ আসনের প্রয়াত এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর উদ্বোধন করেন। কিন্তু পাঁচ বছরে জরুরি বিভাগ, আউটডোর ও আইসিটি কর্ণার চালু ছাড়া আর কোনো কর্যক্রম নেই নতুন এ ভবনে।
জানা যায়, ১৬টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে এখানে কর্মরত আছেন ১৪ জন। ২৫ জন সেবিকার বিপরীতে আছেন ২০ জন। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ৩২ জনের মধ্যে ২১ জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ৩ জনের বিপরীতে একজন। অফিস পিয়ন ৫ পদের বিপরীতে দুইজন। এছাড়া ৪৫ জন মাঠকর্মী থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন ১২ জন।
এদিকে হাসপাতালের সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রতি মাসে প্রতিবেদন আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হলেও এতে কোন কাজ হচ্ছে না। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এডিপির ১৫ শতাংশ ব্যয় করার কথা থাকলেও ওই বরাদ্দ হাসপাতালকে দেয়া হয় না। উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হলেও কোন কাজ হয়নি।
টিএইচ