শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

জামালপুরে দুই কর্মকর্তা দিয়ে চলছে সাত উপজেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিস

জামালপুর প্রতিনিধি 

জামালপুরে দুই কর্মকর্তা দিয়ে চলছে সাত উপজেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিস

জামালপুরে দুই কর্মকর্তা দিয়ে চলেছে সাত উপজেলার সাব রেজিস্ট্রারের কাজ।  এতে জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তি বেড়েছে চরমে। দীর্ঘদিন  যাবৎ এমন সমস্যায় পড়ে আছে জামালপুর জেলার বাসিন্দারা।  

জামালপুর জেলায় সাতটির মধ্যে পাঁচটি অফিসে সাব-রেজিস্ট্রার পদে কাজ করার লোক নেই। এ জেলায় মাত্র দুজন সাব-রেজিস্ট্রার রয়েছে। ওই দুজন সাব-রেজিস্ট্রার পাঁচটি অফিসে দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে জরুরি প্রয়োজনে জমি ক্রয়-বিক্রয় ও কাগজপত্র উত্তোলন করতে পারছেন না সেবাগ্রহীতারা। এতে রাজস্বও হারাচ্ছে সরকার। এ ভোগান্তি থেকে দ্রুত পরিত্রাণের দাবি জানিয়েছে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।

জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘জামালপুর সদর, বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দুজন সাব-রেজিস্ট্রার রয়েছেন। ইসলামপুর ও মাদারগঞ্জ উপজেলার দুজন সাব-রেজিস্ট্রার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। তাদের ছুটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ হবে। 

অপরদিকে জামালপুর সদর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার বদলি হয়েছেন। ফলে এই তিন সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সাব-রেজিস্ট্রার পদ শূন্য রয়েছে। সব মিলিয়ে পাঁচটি সাব-রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে দুই সাব-রেজিস্ট্রার দিয়ে চলছে এ জেলার ৭টি উপজেলার জমি রেজিস্ট্রি কার্যক্রম।

এদিকে মেলান্দহ উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার পলাশ তালুকদার তিনি ইসলামপুর এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার, মহসিন মিয়া তিনি মাদারগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়া শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার বকশীগঞ্জ কার্যালয়ে সপ্তাহে দুই দিন এবং টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার জামালপুর সদর উপজেলা কার্যালয়ে সপ্তাহে তিন দিন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

ফলে এক অফিসের কার্যক্রম সচল রাখতে গিয়ে অন্য অফিসে অনুপস্থিত থাকতে হচ্ছে।

সরেজমিনে জামালপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের ভেতরে অফিশিয়াল বিভিন্ন ধরনের কাজ চলছে। তবে তিনতলার মহাফেজ খানার (রেকর্ড রুম) কার্যক্রম বন্ধ। অফিস চত্বরে দলিল লেখকদের বসার জায়গায় অনেকই টেবিল-চেয়ার জমিয়ে রেখেছেন। কিছু দলিল লেখক আসলেও তারা অলস সময় কাটাচ্ছে। তারা বসে গল্পগুজব করে সময় পাড় করছেন। সেবাগ্রহীতারা এসে কাজ করতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

জামালপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে কথা হয় ঘোড়াধাপ ইউনিয়নের রাজা মিয়ার সঙ্গে। তিনি জমি বিক্রি করেছেন। কিন্তু সদর সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে অফিসার না থাকায় জমি রেজিস্ট্রি করতে পারছে না।

তিনি জানান, জরুরি প্রয়োজনে জমি বিক্রি করছি। কিন্তু রেজিস্ট্রি না দিয়ে তো টাকা নিতে পারছি না। খুব সমস্যা হয়ে গেছে। সেবা গ্রহিতাদের মধ্যে কয়েকজনে জানান, কোর্টে জমি নিয়ে  মামলা হয়েছে। মামলার প্রয়োজনে দলিল তুলতে হবে। দলিল তোলার জন্য আসছি। এসে দেখি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ। দলিল তোলা খুব জরুরি।

মেলান্দহ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসেন মদন  মিয়া। তিনি জানান, ‘সকাল ১০টায় এসেছি দুপুর বেলা কাগজ টেবিলে দলিল লেখক জমা দিয়েছে। 

কখন যে ডাকবে আমাদের তাও জানি না। প্রতিদিন অফিস না হওয়ার কারণে প্রচুর ভিড় হয়। দলিল রেজিস্ট্রি হবে কিনা তাও বলতে পারছি না। বৃদ্ধ মানুষ নিয়ে এসেছি, আজকে যদি দলিল না হয় তাহলে এই বৃদ্ধ লোক নিয়ে আবার আসতে হবে। তখন কতটা ভোগান্তি হবে।

 মেলান্দহ উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর ইসলাম শাহিন জানান, ‘এ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সপ্তাহে দুদিন অফিস হয়। এ দুই দিন খুব ভিড় হয়। পাঁচ দিনের কাজ দুদিনে করতে হচ্ছে। এতে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে।

টিএইচ