সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

ঝালকাঠির প্রতিবন্ধী মেয়েটি পেল জিপিএ-৫

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠির প্রতিবন্ধী মেয়েটি পেল জিপিএ-৫

ইয়ামিনা বিনতে মাহমুদ যখন প্রথম শ্রেণিতে পড়ত তখন বাসার তিনতলা সিঁড়ি থেকে পড়ে চিরদিনের জন্য চলনশক্তি হারিয়ে ফেলেন । এরপর থেকে তার মা বাবা ও হুইল চেয়ারের উপর ভরসা করেই চলতে হয় তার। 

প্রাথমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে যখন স্কুলে ভর্তি করতে চেয়েছিলেন অসুস্থ দেখে কেউ ভর্তির সুযোগ দেননি। এরপর মেয়েটির পড়াশোনার প্রতিভা দেখে মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ এম সি নুর রহমান তাকে বুকে টেনে নিলেন। হুইলচেয়ারকে সঙ্গী করে চলা ইয়ামিনা বিনতে এবার রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজের থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। 

ঝালকাঠি সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের দিবাকরকাঠি গ্রামের প্রকৌশলী  মাহামুদ হাসান সেলিমের একমাত্র মেয়ে তিনি । বর্তমানে তারা কর্মক্ষেত্রের সুবাদে ঢাকায় বসবাস করেন। হুইলচেয়ারে বসেই অদম্য মেধার স্ফুরণ ঘটিয়েছে মেয়েটি।

মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ এম সি নূর রহমান বলেন, অত্যন্ত মেধাবী ইয়ামিনা  হুইলচেয়ারে করেই কলেজে যাতায়াত করেছে। তার মা বাবা-ই তাকে  আনা-নেয়া করতেন। প্রতিবন্ধী হওয়ায় মেয়েটির লেখাপড়ার প্রতি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখিয়েছি আমরা। বাড়তি কেয়ার নিয়েছি। ওর ভিতরে কোন প্রতিবন্ধকতা দেখিনি। 

এসএসসির এই ফলাফলে খুশি ইয়ামিনা বিনতে মাহমুদ জানায়, লেখাপড়াই আমার সবকিছু। পড়াশোনা করতে না পারলে আমার খুব খারাপ লাগে। আমরাও ইচ্ছে হয় অন্য সব সহপাঠীর মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে। 

কিন্তু সেটা সম্ভব না এরজন্য খারাপ লাগে মাঝে মধ্যে। জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমার সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। আমার ইচ্ছে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের মাধ্যমে জনগণের সেবা করা।

ইয়ামিনার মা জান্নাতুল ফেরদৌস জানালেন, যদি ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পায় আর প্রধানমন্ত্রী যদি আমার অসহায় মেয়েটির দিকে দৃষ্টি দেন, তাহলে সে দেশের বোঝা নয়, সম্পদ হতে পারে।

টিএইচ