সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

ডুমুরিয়ায় প্রথমবার ডায়াবেটিক রাইসের ভালো ফলন

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি

ডুমুরিয়ায় প্রথমবার ডায়াবেটিক রাইসের ভালো ফলন

খুলনা জেলার মধ্যে এই প্রথমবার ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা বিলে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট উদ্ভাবিত ‘ডায়াবেটিক রাইস’র চমৎকার ফলন হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস ও ধান চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটে বিগত ৬ বছরের অধিক সময় ধরে বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে ২০২৩ সালের ২ মার্চ, বোরো মৌসুমের জন্য উচ্চ-ফলনশীল স্বল্প গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জি.আই) বা ‘ডায়াবেটিক রাইস’ ব্রি-ধান ১০৫  সারাদেশে চাষাবাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। 

এরই ধারাবাহিকতায় ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে গতবছর ১৫ ডিসেম্বর উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের টিপনা বিলের কৃষক শেখ মনজুর রহমান সম্পূর্ণ নতুন জাতের এই ধান চাষের জন্য তার বীজতলায় ১০৫ জাতের ১০ কেজি ধান বপন করেন। 

অন্য বোরো ধান চাষের মতো সকল প্রকার সার দিয়ে তার ১ একর (১০০ শতাংশ) জমি প্রস্তুত করে গত ১৫ জানুয়ারি, ৩০ দিন বয়সি সেই ধান-পাতাগুলো রোপণ করেন। ৩ মাসের মধ্যে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে সেই ক্ষেতে উচ্চ-ফলনশীল ব্রি ১০৫ জাতের ধানের বাম্পার ফলন দেখতে আগ্রহী কৃষক ও কৃষিবিদরা জড় হচ্ছেন।

গত সোমবার ওই ধানক্ষেতে গেলে কৃষক শেখ মনজুর রহমান বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার ইনসাদ ইবনে আমিনের পরামর্শে ও তাদের দেয়া সকল প্রকার সার-বীজ নিয়ে আমি প্রথমবারের মতো ব্রি ১০৫ জাতের ধান চাষ করে সফল হয়েছি। অন্য জাতের বোরোধানের মতোই চাষাবাদ করেছি। 

তবে এ ধানে ১ বার পানির সেচ বেশি দিতে হয় এবং ১ সপ্তাহ পরে কাঁটতে হয়। তবে ঝড়েও এ ধান গাছ পড়ে না। তিনি সকলের সামনে একটা ধানের বাইল এনে তাতে ২০০টি ধানের দানা গুনে দেখিয়ে বলেন, অন্য বোরো ধানের বাইলে সাধারণত ১৫০ টি দানা হয়, অর্থাৎ এই ধানের ফলনও বেশি। ওই সময় উপস্থিত পার্শবর্তী শোভনা গ্রামের চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ডায়াবেটিক ধানের ফলন যেহেতু ভালো দেখছি, তাই আগামীতে আমরাও এই ধান চাষ করবো।   
 
‘ডায়াবেটিক রাইস’ বা ব্রি-ধান ১০৫’র বৈশিষ্ট প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট থেকে বলা হয়েছে, এই ধানের গুনগত মান ভালো, চালের আকৃতি মাঝারি চিকন। এর জিআইর মান ৫৫ হওয়ায়, এটাকে লো-জিআই রাইস বা ডায়াবেটিক রাইস বলা যায়। অন্য জাতের তুলনায় এর ফলনও বেশি। ১ থেকে ২০ অগ্রহায়নের মধ্যে পাতা ফেলা ও তার ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে রোপণ করতে হবে। এর জীবনকাল ১৪৮দিন।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, অন্য ধানের তুলনায় ডায়াবেটিক রাইস’এ গ্লুকোজ (মিষ্টি)’র পরিমান খানিকটা কম বলে এ ভাতে ডায়াবেটিক রোগ বিস্তার বা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের চেষ্টায় প্রথমবার ডুমুরিয়ায় চাষ করেই খুব ভালো ফলন হয়েছে। আগামীতে এই ক্ষেতের ধানই বীজ তৈরি করে চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আশা করছি, ডুমুরিয়া এলাকার কৃষকরা মনজুরের সাফল্য দেখে ব্রি-১০৫ ধান চাষে এগিয়ে আসলে তাদের ও দেশের উপকার হবে। 

টিএইচ