জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় জনপদ বরগুনার পাথরঘাটায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট চলছে। প্রতিদিন পানির চাহিদা বাড়লেও সুপেয় পানির পরিমাণ বাড়ছে না।
পানির উৎস পুকুর, দীঘি, জলাশয়, নদ-নদী, খাল-বিল হ্রাস পাচ্ছে। চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে কিন্তু নিরাপদ খাবার পানি নেই। সুপেয় পানির অভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষের জনজীবন।
সমুদ্র উপকূলে চারদিকে পানি নিয়ে বসবাস বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলাবাসীর। অথচ এক ফোঁটা বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার করতে হয় উপজেলার পৌরসভাসহ ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে কাঁঠালতলী, কালমেঘা পাথরঘাটা সদর, চরদুয়ানী, নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মানুষকে। কারণ নদী ও সমুদ্রের পানি লবণাক্ত হওয়ায় বৃষ্টি আর পুকুরের পানি তাদের একমাত্র ভরসা।
এদিকে বৈশাখের প্রখর রোদে অধিকাংশ পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় সুপেয় পানি পাওয়া আরো দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফলে এক কলস পানি সংগ্রহে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হাঁটতে হয় গ্রামবাসীকে। একাধিক উন্নয়ন সংস্থা পানির ফিল্টার বসালেও পুকুরে নাব্যতা কমে যাওয়া এবং চাহিদার তুলনায় পুকুর কমে যাওয়ায় সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, চার দিকে লবণ পানি হওয়ায় গোসল ও খাওয়া যাচ্ছে না। ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার দূর থেকে পানি নিতে এসেও সিরিয়াল না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে।
পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, বিগত বছরগুলোতেও সংকটময় পরিস্থিতিতে ব্যাচেল ট্রাকের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাবার পানি সরবরাহ করেছি, এবছরও এমন অবস্থায় জরুরি সংকট সমাধানে গাড়িতে পানি সরবরাহের আশ্বাস দিলেন তিনি।
গরম শুরু হওয়ার পাথরঘাটায় পানির সংকট আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে একটি প্রকল্প চালু আছে এই কাজটি সম্পূর্ণ হলে অনেকটাই এই সংকট সমাধান হবে বলে দাবি করেন পাথরঘাটা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাথরঘাট উপজেলায় ৮৬টি টিউবওয়েল, ৬৮টি সোলার পিএসএফসহ ৪৫২০টি পানির ট্যাংকি ২০২৫ সালের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়াও ৪৮টি পুকুর খনন করা হলেও পানির তীব্র সঙ্কটে উপজেলা জুড়ে।
টিএইচ