বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ রংপুর রেঞ্জের বিভিন্ন ইউনিটের আনসার ভিডিপি সদস্য-সদস্যা এবং পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ার চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন।
এ সময় মহাপরিচালক বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে তৃণমূল মানুষের সক্ষমতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর করতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও কল্যাণধর্মী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টার ফলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আনসার বাহিনী স্বাধীনতার সূচনা থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বহুমুখী কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে আর্থসামাজিক নিরাপত্তার ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়াই বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্য।
শীতকালে বাংলাদেশের সবচেয়ে ঠান্ডাপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত উত্তরবঙ্গের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের এ উদ্যোগ শুধুমাত্র শীতের তীব্রতা লাঘব করতেই নয়, বরং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি সমাজের দায়বদ্ধতাও বটে।
এর আগে, মহাপরিচালক রংপুর রেঞ্জ কার্যালয়ে আনসার ভিডিপি তৃণমূল সদস্যদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
শীতের আগমন বার্তায় জবুথবু হয়ে যাওয়া উত্তরবঙ্গের বহু মানুষের মাঝে রয়েছেন এ বাহিনীর অনেক বয়োবৃদ্ধ সদস্য-সদস্যাবৃন্দ, যারা দীর্ঘদিন ধরে এ বাহিনীর মাধ্যমে করেছেন রাষ্ট্রের সেবা ও সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজ। দলনেতা/নেত্রীদের মধ্যে অনেকেই নীতিমালা অনুযায়ী বয়স উত্তীর্ণ হলেও বাহিনীর সাথে নাড়ীর টান ছাড়তে পারেনি। তাই বাহিনী তাদের নিবেদিতপ্রাণ অবদানকে মনে রাখতে চায় আমৃত্যু এবং বাহিনীর সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয় তৃণমূলের স্বেচ্ছাসেবী আনসার ভিডিপিদের তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে চান যথাযথভাবে। তাদের অবদানকে সম্মান ও স্বীকৃতি দেয়ার প্রেরণা থেকে বাহিনী প্রধান আসন্ন শীতের প্রকোপ মোকাবেলায় আজ রংপুরের বাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বয়স্ক ভাতাভুক্ত সদস্য-সদস্যদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। মানবিক এই উদ্যোগ চলমান থাকবে শৈত্য আক্রান্ত জেলা ও বিভাগে।
তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ের এই সদস্যদের মাধ্যমে বাহিনী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজেদের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিচ্ছে। তাদেরকে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা গেলে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমে আনসার বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব আরও শক্তিশালী হবে।
বাহিনীর সকল সদস্যদের মহাপরিচালকের দর্শন মনে রাখতে হবে, "যারা দেশ ও মানুষের আর্থসামাজিক কল্যাণে নিয়োজিত আছেন বা ছিলেন, তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাহিনী পিছপা হবে না কোনোদিন"।
শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবে সহায়তা করার পাশাপাশি, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের সার্বিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নিজেদের আরও দৃঢ়ভাবে যুক্ত করেছে। শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রংপুর রেঞ্জের পরিচালক মো. আব্দুস সামাদ এবং বাহিনীর অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম আজ রাজশাহী রেঞ্জের বিভিন্ন ইউনিটে অব্যাহত থাকবে।
টিএইচ