রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

দেবহাটার মৎস্য আড়তে ডিজিটাল ওয়েট মেশিন ব্যবহারের দাবি

দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

দেবহাটার মৎস্য আড়তে ডিজিটাল ওয়েট মেশিন ব্যবহারের দাবি

দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকার মাছ বিক্রির আড়ৎ বা সেডগুলোতে মাছ ক্রয়-বিক্রয় করা হয় পুরাতন পদ্ধতির হাত দাঁড়িপাল্লায়। আধুুনিক সময়ে সবক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগলেও দেবহাটার মৎস্য সেডগুলোতে আনা হয়নি পরিবর্তন। কারণ এই মাছ ক্রয়ে রয়েছে ব্যাপক প্রতারণা। 

মাছ চাষিদের ওজনে কম দিতে এই সনাতন পদ্ধতির হাত দাঁড়িপাল্লায় মাছ বিক্রিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ বহুদিনের। তাছাড়া ব্যবসায়ীদের বিশেষ কৌশলে মাছের ওজনে কম দিয়ে চাষিদের ঠকিয়ে মোটা অংকের টাকা আয় করাই প্রধান লক্ষ্য আড়ৎদারদের। সে কারণে কোনভাবেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে আসতে চান না এসব ব্যবসায়ীরা। 

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা পারুলিয়া মৎস্য আড়তে গত কয়েকদিন ধরে ডিজিটাল মিটারে মাছ ক্রয়বিক্রয় করা শুরু হয়েছে। অপরদিকে গাজীরজাট, টিকেট, সুবর্ণাবাদ, কুলিয়াসহ উপজেলার পাশ্ববর্তী বাবুরআবাদ, বদরতলা মৎস্য আড়তে চিংড়ি ও সাদা মাছ ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। 

বিভিন্ন এলাকার মৎস্যচাষিরা তাদের উৎপাদিত মাছ এসব আড়তে তোলেন নায্য দাম পাওয়ার আশায়। কিন্তু কিছু কিছু স্থানে ওজনে কম দেয়ায় ব্যবসায়ীদের ওপর রাগ ও ক্ষোভ জন্মায় বিক্রেতাদের। এলাকার মৎস্যচাষিরা প্রান্তিক হওয়ায় দাদন বা এককালিন টাকা নিয়ে মাছচাষ করেন। 

এতে করে ওই ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন দাদন গ্রহণ করা চাষিরা। ওজনে কম দেয়া নানা সমস্যা তাদের চোখের সামনে ঘটলেও কিছু করার থাকে না প্রান্তিক চাষিদের। তবে ওজনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার হলে এই কারসাজি কমে আসার পাশাপাশি সঠিক মাপে মাছ বিক্রির সুযোগ পাবেন চাষিরা। 

বর্তমানে বাজারে আসছে বিভিন্ন ডিজিটাল ওয়েট মেশিন বা ওজন মাপার যন্ত্র। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে সহজ ভাষায় যার নাম দেয়া হয়েছে ‘ওজন বন্ধু’। জেলার বেশকিছু আড়তের ব্যবসায়ীরা ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করলেও কিছু অস্বাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে দেবহাটায় আলোর মুখ দেখছে না আধুনিক এ পদ্ধতি। 

অন্যদিকে অভিযানের কথা শুনে অনেকে আগে থেকে গা ঢাকা দেন। এতে করে সনাতন এই পদ্ধতিতে চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কেবলমাত্র ডিজিটাল পদ্ধতি না থাকায় ওজনে কম দেখেও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের হটলাইনে অভিযোগ করার সুযোগ থাকে না মৎস্যচাষিদের।  

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সবুজ জানান, বর্তমান আমরা ডিজিটাল যুগে বাস করছি। কিন্তু কেবলমাত্র দেবহাটার মৎস্য সেডগুলোতে এখনো পুরাতন পদ্ধতিতে মাছ কেনাবেঁচা হয়। যাতে সাধারণ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেবহাটার সব আড়তগুলোতে ডিজিটাল ওজন মাপা যন্ত্র চালু করতে কয়েকবার উপজেলা সমন্বয় সভায় বলা হয়েছে। 

এমনিক রেজুলেশনে আনা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দেবহাটা উপজেলার সর্বত্র এই ডিজিটাল ওজন মাপক যন্ত্র ব্যবহার নিশ্চিত করতে সুদৃষ্টি কামনা করছি। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাছ কেনাবেচা হলে ওজনে কম দেয়ার বিষয়টি থাকবে না। আর চাষিরা প্রকৃত ওজনে মাছ বিক্রি করে লাভবান হবে। আমরা জিডিটাল পদ্ধতিতে মাছ কেনাবেচার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছি। কিন্তু বিষয়টি ভোক্তা অধিকার বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হওয়ায় আমাদের একার পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না।

টিএইচ