সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটায় অপ সিজনের তরমুজ চাষে সাড়া ফেলেছে কৃষকদের মাঝে। অল্প খরচে এ তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৎস্য ঘেরের ভেঁড়িতে পতিত জমি হিসাবে পরীক্ষামূলকভাবে এ তরমুজের চাষ শুরু হয়। যা বর্তমানে সফলতা পেয়েছেন অনেক কৃষক।
কৃষি দপ্তরের তথ্য মতে এ বছর প্রায় ৪০ জন কৃষক এই তরমুজ চাষের সাথে যুক্ত হয়েছেন। চাষের জন্য আলাদা জমির প্রয়োজন হচ্ছে না। মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে খুব সহজে চাষ করা যাচ্ছে এই তরমুজ। অল্প দিনে লাভের মুখ দেখায় প্রতিবছর চাষের পরিমাণ বাড়ছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৪০ জন কৃষকের মাঝে, ২টি প্রকল্পে গত ৩ মাস পূর্বে তরমুজের বীজ সরবরাহ করা হয়। দেবহাটার ৫টি প্রদর্শনীতে ৪০ জন কৃষকের মোট চারটি জাতের বীজ প্রদান করা হয়। উন্নত জাতের তৃপ্তি, ব্লাক বেবি, সুগারকুইন ও বাংলা লিংক, প্রতি বিঘা জমিতে ১০০ গ্রাম থেকে ১২০ গ্রাম বীজ রোপণ করা যায়। অপসিজন তরমুজ বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের ঘেরের নিজস্ব জমিতে এই তরমুজের চাষে ঝুঁকছে।
সেকেন্দ্রার তরমুজ চাষি আমিরুল ইসলাম জানান, তরমুজ চাষ করে আমরা স্বাবলম্বী হচ্ছি। গত বছরের তুলনায় এই বছর তরমুজের ফলন অনেক ভালো। এখন পর্যন্ত ৪০ মন বিক্রি করছি এখনো যা আছে তাতে ২০ মনের মতো বিক্রি করতে পারবো বলে আশাবাদী।
কৃষক এমাদুল ইসলাম জানান, আমি এই বছর প্রথম ৪০ বিঘা ঘেরের ভেড়িতে চাষ করছি। বুঝে চাষ করলে ক্ষতির পরিমাণ কম হয়। অন্য ফসলের তুলনায় এ চাষে খরচ কম। অল্পতে অনেক লাভ করা যা। প্রথমে আমি এটা শখ করে চাষ করে আত্মীয় স্বজনের বিনামূল্যে তরমুজ প্রদান করার পাশাপাশি এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো তরমুজ বিক্রি করছি। আশা করি আরও ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব।
কুলিয়া গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম জানান, এই তরমুজ দেখতে যেমন চমৎকার তেমন খেতেও অনেক মিষ্টি। বাজারে অনেক চাহিদা আছে। এবছর উপজেলার অনেক বেকার যুব কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন তারা এই চাষ করছে। একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হচ্ছে অন্য দিকে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, দেবহাটা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কৃষকদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই অপসিজন তরমুজ চাষের পদ্ধতি ও বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে কৃষকদেরকে অবহিত করেছেন।
দেবহাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান জানান, দেবহাটা উপজেলায় এই তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে আগামীতে আরো বৃহৎ আকারে এই তরমুজ চাষে কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়া হবে। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান জানান, দেবহাটার ভূমি কৃষি বান্ধব, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে কৃষরাও পরিবর্তন হচ্ছে।
নতুন নতুন এই ধরনের ফসল চাষের মাধ্যমে আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হচ্ছে, আগামীতে এই এলাকার কৃষকদের এই তরমুজ চাষে আর বড় আকারে করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
টিএইচ