পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পরিবারের অমতে বিয়ে করায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত চিলাহাটি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে মামলা হয়েছে। মামলায় চেয়ারম্যানের পাঁচ আসামিকে আসামি করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা করেন আব্দুস সাত্তার ওরফে ইঞ্জিল নামে এক ব্যক্তি। এর আগে গত ২৪ মার্চ চিলাহাটি ইউনিয়নের তিস্তাপাড়া এলাকা থেকে ইঞ্জিলের ছেলে মোস্তাকিম ও চেয়ারম্যানের মেয়ে সিফাতে সাদিয়া সুহা কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। এর আগেও তারা উভয়ই বাসা ছাড়লে চেয়ারম্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসেন।
২০২১ সালে তারা বিয়ে করেন এবং নিকাহ রেজিস্ট্রি করেন বলে সমপ্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনার দিন (সোমবার) পুনরায় মেয়েকে বাসায় খুঁজে না পেয়ে চেয়ারম্যানের ভাই ও লোকজন রাত আনুমানিক ৯টায় মোস্তাকিমের বাড়িতে গিয়ে তার ও সুহার অবস্থান জানতে চায়।
তাদের অবস্থান সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে না পারায় মোস্তাকিমের মা ফরিদা বেগম, বাবা আব্দুস সাত্তার ও ছোট ভাই খোকনের চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেহেনা বেগমকে চেয়ারম্যানের ভাই নূর হোসেন তার বাসায় ডেকে নিয়ে গিয়ে তার ভাইরাসহ কয়েকজন মিলে সবার উপর শারীরিক নির্যাতন করে। এতে মোস্তাকিমের মায়ের দুই হাত ভেঙে যায়। একই সঙ্গে তার যৌনাঙ্গে লাঠি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করা হয়। খোকনকে ভাউলাগঞ্জ বাজারে তার কর্মস্থল থেকে ডেকে এনে বস্তাবন্দি করে মারধর করা হয়।
পরে খোকনের শ্বশুর হোসেন আলী ৯৯৯ এ কল করলে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম তাদের উদ্ধার করে। গত ২৫ মার্চ ভোরে গুরুতর আহত চারজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। গত ২৬ মার্চ নির্যাতনে আঘাতজনিত কারণে রেহেনার গর্ভপাত হয়।
পরে রেহেনা ও তার শাশুড়িকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে খোকন ও তার স্ত্রী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সাত্তার ও তার স্ত্রী দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তারের পুলিশ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
এ ঘটনায় সাংগঠনিকভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল গণি বসুনিয়া বলেন, ঘটনাটি আমি পুরোপুরি জানি না। জেনে সাংগঠনিক ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন সুযোগ নেই। দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা বলেন, তদন্তসাপেক্ষে আসামি গ্রেপ্তারে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
টিএইচ