শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

দোয়ারাবাজারের হাট-বাজারে দেখা মিলছে দেশি প্রজাতির মাছ

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি 

দোয়ারাবাজারের হাট-বাজারে দেখা মিলছে দেশি প্রজাতির মাছ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের বিভিন্ন হাট-বাজারে দেখা মিলছে প্রচুর দেশি প্রজাতির মাছ। দাম কিছুটা কমের কারণে খুশি ক্রেতারা আর দাম কম হলেও অনেক বেশি মাছ ধরতে পেরে খুশি জেলেরা। দোয়ারাবাজারে এবার আষাঢ় মাসেই প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রকৃতি তার স্বরূপ ফিরে পেয়েছিল। 

বৃষ্টিতে উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল, প্লাবনভূমি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আষাঢ় যেন ভালোভাবেই জানান দেয় এবার। বৃষ্টির পানির সাথে উঠে আসা ডিমওয়ালা দেশি প্রজাতির মা মাছগুলো উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নদী ও খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে পায় বংশ বিস্তারের এক সুবর্ণ সুযোগ। 

তাদের বিচরণ ক্ষেত্রে অবাধে ডিম ছাড়ার সুযোগ পাওয়ার ফলে এবার দেশি মাছের প্রচুর সমারোহ দেখা যাচ্ছে উপজেলার হাট- বাজারগুলোতে। 

উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাস মাছের প্রজননকাল। কিন্তু এর আগেই উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়, নদী-নালা, খাল-বিলে মা মাছ নিধন করতো এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা। 

বিভিন্ন পয়েন্টে কুঁচ, জুইতা, টেঁটা, কারেন্ট জাল, বেড়জাল, চাই, খরাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত ডিমওয়ালা মা ও পোনা মাছ নিধনের উৎসব চলতো। বর্ষা আসার আগেই খাল বিলে মা মাছ নিধন চললেও দেখার কেউ ছিলো না। 

অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে ডিমওয়ালা মা মাছ ও ছোট পোনা মাছ ধরা, খাল-বিল-ডোবা ভরাট, উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ নির্মাণসহ মাছের বিচরণক্ষেত্রের অনুকূল পরিবেশ সংকট হওয়ার কারণে দিনকে দিন দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিলো।

উপজেলার গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারগুলোতে নানা ধরনের দেশি মাছের সমারোহ চোখে পড়ছে। সুস্বাদু ও পুষ্টি গুণে ভরা দেশীয় এসব মাছের মধ্যে কৈ, মাগুর, শিং, পাবদা, টেংরা, পুঁটি, ডারকা, মলা, ঢেলা, শৌল, বোয়াল, আইড়, ভ্যাদা, বাইম, খলিশা, ফলি, চিংড়ি, টাকি, চিতল, বালিয়া, কাকিলা, চাপিলা, চাঁদা, গোল চাঁদা, আইড়, গুলশা, পাবদা, দেশি পুঁটি, সরপুঁটি, তিতপুঁটি, বাটা, পিয়ালি, ছোট টেংরা, বড় টেংরা, চান্দা, কাজলি, চ্যাং, ছোট চিংড়ি, বাতাসি, বড় বাইম , শালবাইম, কুচিয়া, টাটকিনি, ধুতরা, গছি, বইরালি, গোলসা  প্রজাতির দেশীয় মাছগুলো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাষকৃত জমিতে ভেসে উঠছে মাছ। আর ওই মাছ ধরার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। কেউ চালুনি, কেউ ডালি, কেউ আবার ছোট জাল দিয়ে ধরছে সেই মাছ। এ দৃশ্য যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে হারানো সেই সোনালী  অতীত।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মন বলেন, মৎস্য সংরক্ষণ আইনে সব ধরনের মা ও পোনা মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গোটা উপজেলায় এবার যথারিতি তা মনিটরিং করা হয়েছে। ফলে বিলুপ্ত প্রায় দেশি মাছের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

টিএইচ