কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রায় ৪০ ভাগ অগভীর নলকূপ দিয়ে পানি ওঠানো যাচ্ছে না। শুষ্ক মৌসুমে তীব্র তাপদাহের কারণে পানির স্তর কিছুটা নেমে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নলকূপ দিয়ে উত্তোলিত ভূগর্ভস্থ পানীয়জলের ওপর নির্ভরশীল গ্রামের প্রায় শতভাগ মানুষ। তবে যাদের গভীর নলকূপ রয়েছে, তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে ভূগর্ভস্থ পানি সংকটের পাশাপাশি অনেক এলাকায় আর্সেনিকের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে। ফলে বিকল্প না থাকায় আর্সেনিকযুক্ত পানিই পান করতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, শুকনো মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় আর্সেনিকের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এখানকার প্রায় শতভাগ মানুষই ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল। সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে দৌলতপুর উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার টিউবওয়েল এবং প্রায় সাড়ে ছয় হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে।
এসব নলকূপের মাধ্যমে তারা পানি খাওয়াসহ প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। চাষাবাদের জন্যও ভূগর্ভস্থ পানিই এখানকার কৃষকদের একমাত্র ভরসা।
এদিকে উপজেলার মথুরাপুর, প্রাগপুর, আদাবাড়িয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নে নলকূপে পানি সংকটের পাশপাশি আর্সেনিকের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পানি সংকটের কারণে গ্রামের মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানিই পান করছেন। এতে করে মানুষের আর্সেনিক সংক্রমিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের শালিমপুর গ্রামের আল আমিন রিন্টু বলেন, টিউবওয়েলের সঙ্গে মোটর লাগিয়ে তিনি পানি উত্তোলন করেন। পাইপে পানি ধরে রাখা যাচ্ছে না। মোটর চালুর পর দু-এক মিনিট পানি ওঠার পর আর পানি উঠে না। ১০-১৫ মিনিট চেষ্টার পর সামান্য কিছু পানি আসে।
একই ইউনিয়নের বাগোয়ান গ্রামের বাসিন্দা আকরাম হোসেন বলেন, তাদের গ্রামের বেশ কয়েকটি টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক ধরা পড়েছে। পানিতে আর্সেনিকের নানা লক্ষণ থাকার পরও গ্রামের মানুষ সচেতন না হওয়ায় ওই পানিই পান করছে।
খাস মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার কবির মিন্টু বলেন, গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েল দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না। পানি সংকটের পাশাপাশি তার ইউনিয়নে আর্সেনিকের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ বিষয়টি উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় তুলে ধরা হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে মানুষের বড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী খাদিমুল ইসলাম বলেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর কিছুটা নিচে চলে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। বর্ষা শুরু হলে নলকূপগুলো ফের স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আর্সেনিকের বিষয়ে তিনি বলেন, পানি পরীক্ষার মাধ্যমে আর্সেনিকযুক্ত নলকূপগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলো ব্যবহার না করতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
টিএইচ