প্রতিদিনই চলছে দৌলতপুরের বিভিন্ন স্পটে কোটি কোটি টাকার জুয়া। জুয়া খেলতে এসে নিজেদের সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন দৌলতপুর ও পাশের উপজেলা থেকে আসা বিভিন্ন পেশার মানুষ।
এদিকে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা একাধিকবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জুয়া খেলার বিষয়টি উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ার পরেও চোখে পড়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন। এতে চরম হতাশা ও তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এই উপজেলার সাধারণ জনগণের মাঝে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সর্বনাশা জুয়া ছেড়ে আসা এক ব্যক্তি বলেন, বর্তমানে দৌলতপুরে বড় ছয়টি জুয়ার আসর বসে। সেটি হলো রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বিশ্ববাঁধ, হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়নের কল্যাণপুর মাঠপাড়া, রিফাইতপুর ইউনিয়নের তেলিগাংদিয়া, মরিচা ইউনিয়নের কোলদিয়াড়, মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ ও বোয়ালিয়া ইউনিয়নের মাঠের মধ্যে বসছে জমজমাট জুয়ার আসর।
এছাড়াও উপজেলার একেবারে সন্নিকটে পূর্বপাড়া এলাকার ত্রিমোহনী ও পাশের বাগানসহ বেশ কিছু এলাকায় বিভিন্ন দোকান বা পাড়া মহল্লায় বাঁশের মাচা করে জুয়ার আসর বসে। এদিকে দীর্ঘ দিন ধরে ৭/৮ জনের একটি গ্রুপ এই জুয়ার জায়গাগুলো পরিচালনা করে আসছে।
গত মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জুয়া খেলার বিষয়টিকে সামনে এনে দৌলতপুরের এক সিনিয়র সাংবাদিক বক্তব্য দেওয়াতে দৌলতপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তিনি রাগান্বিত হয়ে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান।
এবিষয়ে রিফায়েতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বাবলু বলেন, তেলিগাংদিয়ার বিষয়টি একাধিকবার আইন শৃঙ্খলার মাসিক সভাতে উপস্থাপন করেও কোন শুরাহা হয়নি।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল বলেন, আল্লার ত্রিশ দিন বিশ্ববাধে জুয়ার আসর বসে। যেটা গত কিছুদিন আগে আমরা ১৪ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দৌলতপুর থানার ওসির চায়ের দাওয়াতে গিয়ে জুয়া খেলার বিষয়টি বলেছি এবং একাধিকবার আইন শৃঙ্খলার মাসিক সভায় বলেছি তাতে কোন লাভ হয়নি।
এসব জায়গায় জুয়া খেলার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি জুয়া ও মাদকের বিপক্ষে, দৌলতপুরে কোন কোন জায়গায় জুয়া চলে এটা আমি জানতাম না, এটা আপনাদের মারফত আমি প্রথম শুনলাম, গত মাসেও জুয়ার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দিয়েছি। কোন কোন স্পটে জুয়া চলে তার সঠিক তথ্য পেলে সেসব স্পটে পুলিশ পাঠিয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই জুয়া খেলা বন্ধ ও তার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন উপজেলার সুশীল সমাজ।
টিএইচ