সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

নীলফামারীতে বিদ্যালয়ের কক্ষ ভাড়া নিয়ে চলছে কৃষিব্যাংক

নীলফামারী প্রতিনিধিপ্রতিনিধি

নীলফামারীতে বিদ্যালয়ের কক্ষ ভাড়া নিয়ে চলছে কৃষিব্যাংক

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নীলফামারী সদর উপজেলার এক বিদ্যালয়ের কক্ষ ভাড়া নিয়ে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক যাদুরহাট শাখা কর্তৃপক্ষ। আভিযোগ উঠেছে গত ১ মার্চে যাদুরহাট শাখা ব্যাংকটি হঠাৎ করে কাগজপত্র গুছিয়ে পালিয়ে যায় প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বাবড়ীঝাড় দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়টির ভবনের নিচতলায় একটি ক্লাস রুমে। সেখানেই চলছে ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রম। 

দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মূল ফটকে টাঙানো হয়েছে ব্যাংকের সাইনবোর্ড। সেখানে বড়ো অক্ষরে লেখা আছে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক যাদুরহাট শাখার নতুন ভবন উদ্বোধন ও গ্রাহক সমাবেশ, স্থান শাখা প্রাঙন। নতুন শাখা ভবন কার্যক্রম শুরু হয় গত ১ মার্চ। এসব লেখা দেখে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ এলাকাবাসী। গত সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সেই কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, এলোমেলোভাবে পড়ে আছে ব্যাংকের ফাইল পত্র। যে যার মতো বসে চালাচ্ছেন তাদের কার্যক্রম। 

জানতে চাইলে কথা বলতে নারাজ ব্যাংকের ম্যানেজার। বিদ্যালয়ের ভবন দখল করে ব্যাংকের কার্যক্রম চলায় লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মাঝে। নাম না বলা শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, মানুষ গড়া প্রতিষ্ঠানে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। স্কুলের ঘর দখল করে ব্যাংকের শাখা ভবন উদ্বোধন করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। 

এ ছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিদ্যালয়ের ভবন ভাড়া দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ভবনের দোতলায় উঠে দেখা হয় প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন আহমেদের সাথে। কথা হলে তিনি জানান, স্কুলের উন্নয়নের জন্য আমার কক্ষটি ভাড়া দিয়ে আমি দোতলায় উঠেছি। তাছাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং ইউএনওর নির্দেশনায় বিদ্যালয় ও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ভাড়া দিয়েছি। 

মাসিক ভাড়ার আট হাজার টাকা বিদ্যালয়ের একাউন্টে জমা হচ্ছে, বিদ্যুৎ বিলের টাকা আলাদাভাবে নিচ্ছি। চুক্তিপত্র বা কোনো রেজুলেশন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলতে পারেন না, সভাপতির সাথে কথা বলতে বলেন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি নাজিনুর রহমান বলেন, যাদুরহাট কৃষি ব্যাংক শাখাটি আমাদের তিনটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জন্য। দূরত্বের কারণে পঞ্চপুকুর ওচড়াইখোলা ইউনিয়নবাসীর সেবা পেতে ভোগান্তির মধ্যে পরতে হয়। তাই সবার

সুবিধার্থে আমরা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বাবড়ীঝাড় দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কক্ষে স্থানান্তর করি। তারা ভাড়া দেয়, তাছাড়া স্কুলেরও উন্নয়ন, সাধারণ মানুষ পাচ্ছে লেনদেনের সুবিধা। অন্য কোথাও ভবন পেলে তারা সেখানে চলে যাবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যাদুরহাটে টিনশেড ঘর হওয়ায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেয়ে বাবড়ীঝাড়ে আনা হয়েছে। তবে যাদুরহাট শাখা নামেই চলবে। স্কুল কমিটি ভাড়া দিয়েছে বলে সেখানে কার্যক্রম চলছে।

জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে কোনো ব্যাংক চলতে পারে না। বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

টিএইচ