গতবছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গত ১ বছরে নেত্রকোণা জেলায় ২৩৯টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশিরভাগ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সড়ক দুর্ঘটনায়। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়াও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্যে রয়েছে হত্যা, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা, বিষপানে আত্মহত্যা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ও পানিতে ডুবে মৃত্যু। সচেতন বিশ্লেষকদের মতে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়েও অনেক বেশি। কারণ অনেক সময় নিভৃতপল্লী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে মৃত্যু, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কেউ মারা গেলে পুলিশি হয়রানী কিংবা ময়নাতদন্তে কাঁটা ছেড়ার ভয়ে প্রশাসনকে না জানিয়ে অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি স্বাপেক্ষে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করায় সরকারি হিসেবে নথিভূক্ত হয় না।
নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্র মতে, নেত্রকোণা জেলায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ১৫টি, ফেব্রুয়ারিতে ১২টি, মার্চে ২৭টি, এপ্রিলে ২৭টি, মে তে ২০টি, জুনে ১৬টি, জুলাইয়ে ১৯টি, আগস্টে ২৬টি, সেপ্টেম্বরে ১৯টি, অক্টোবরে ১৮টি, নভেম্বরে ১৮টি ও ডিসেম্বরে ২২টিসহ মোট ২৩৯টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্বোচ্ছার লেখক ও সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে সবার আগে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিবহন মালিক সমিতি ও জেলা মোটরযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে সব ধরণের যানবাহন চালকদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ গাড়িচালক তৈরির পাশাপাশি রাস্তায় কিভাবে গাড়ি চালাতে হয় সেসব নিয়ম কানুন সম্পর্কে তাদের সচেতন করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক, অদক্ষ এবং মাদকাসক্ত অবস্থায় কেউ যেন গাড়ি না চালায় এবং ট্রাফিক আইন যাতে সবাই মেনে চলে তার জন্য ট্রাফিক বিভাগকে আরো সততা ও আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে হবে।
নেত্রকোণা বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) কেশব কুমার দাস বলেন, গত ১ বছরে ৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯১ জন নিহত ও ৮২ জন আহত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধকল্পে আমরা বাস, ট্রাক, পিক-আপ ভ্যান ও অন্য যানবাহন চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ চালক হেলপার ও পথচারীদেরকে স্ব স্ব স্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধকল্পে নিরাপদ সড়ক আইন বাস্তবায়নে আমরা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে চালক, হেলপার ও পথচারীদের মধ্যে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পুলিশ বিভাগ সড়ক দুর্ঘটনার পরপরই মামলা নিচ্ছে এবং অভিযুক্ত চালকদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে।
টিএইচ