সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

পাটগ্রামে বালুচরে ফসলের সমারোহ

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

পাটগ্রামে বালুচরে ফসলের সমারোহ

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বিভিন্ন এলাকার নদীর বিস্তৃত চরে ফসলের সমারোহ। এ উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা, পাটগ্রাম পৌরসভা, জগতবেড় ও জোংড়া ইউনিয়নের ধরলা নদীর প্রায় ১৩০ হেক্টর চরাঞ্চলে চলছে ফসল চাষাবাদ। 

গত কয়েক বছরের চেয়ে এবারে দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরে সর্বাধিক আবাদ হচ্ছে। এ চাষাবাদে দেড় হাজারেরও অধিক টন ফসল উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা হবে এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিবছরে বর্ষায় অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ী ঢলের পানি আসে নদীগুলো দিয়ে। এতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে নানা ক্ষয়ক্ষতি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে নদীপাড়ের অসংখ্য মানুষ। গতবছরের অক্টোবরে তিস্তা নদীর পানিতে দহগ্রামে প্রবল বন্যা দেখা দেয়। প্রতিবছর দহগ্রামের জমি ভেঙে বিলীন হয় তিস্তায়। জেগে ওঠে মাইলের পর মাইল বালুর চর। এসব বালুর চরে এবারে অধিক পলি পড়েছে। জমি ও বালুর চরের দাবিদার স্থানীয় গ্রামবাসীরা এ বছরে অনেক বেশি চাষাবাদ করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীর চরে একরের পর একর আবাদ করা হয়েছে ভুট্টা, গম, বাদাম, আলু, মরিচ, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, সরিষাসহ বিভিন্ন শাক-সবজি। এসব ফসলের ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষক পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও কয়েকশ কৃষি শ্রমজীবী মানুষ। কেউ ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র (শ্যালো মেশিন) দিয়ে ক্ষতে পানি দিচ্ছেন। 

কেউ ক্ষতে নিড়ানি করছেন। আবার কেউ আগাছা তুলছেন এভাবে সন্ধা পর্যন্ত চলে কৃষিকাজ। ক্ষেতের পরিচর্যায় সকালে মাঠে যান, সঙ্গে নিয়ে যান খাবার ও পানি। ক্ষেতের আইলেই খাবার খেয়ে কাজে ফিরে চরের কৃষকেরা।

কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর পাটগ্রাম উপজেলা কাযার্লয় সূত্রে জানা গেছে, এবারে উপজেলার দহগ্রাম তিস্তার চর ও জগতবেড় এবং জোংড়া ইউনিয়নের ধরলা নদীর চরাঞ্চলে ভুট্টা আবাদ হচ্ছে ৬৫ হেক্টর জমিতে। একইসঙ্গে গম ২৫ হেক্টর, আলু ১৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৮ হেক্টর, মরিচ ৬ হেক্টর, চিনাবাদাম ৫ হেক্টর ও মিষ্টি আলু ৪ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে। এতে একহাজার ৬৫৩ টন ফসল উৎপাদন হবে।

দহগ্রামের চরের কৃষক ফরহাদ বলেন, ‘তিস্তা নদী যখন ভাঙে তখন ধু -ধু বালু পড়ে। আমরা আবাদ করি। হাজার হাজার বিঘা ভুট্টার আবাদ হয়েছে। আমরা খুব খুশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল গাফ্ফার বলেন, এবারের মৌসুমে নদীর চরগুলোতে পলিমাটি বেশি পড়েছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা সবাই চাষাবাদ করছে। ফসলও বেশ ভালো হয়েছে। ফলনও ভালো হবে। আমরা অনুমান করছি এসব চরে উৎপাদিত ফসলের মূল্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা হবে। উপজেলা কৃষি কার্যালয় হতে চরাঞ্চলে চাষাবাদে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

টিএইচ