শরীয়তপুরেরজাজিরায়কাজিরহাট এলাকায় বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) জমে উঠেছে হাট। তবে মন্দা পাটের বাজার। বিক্রেতা আছে, নেই তুলনামূলক ক্রেতা। তবে কৃষি অফিসের তথ্য বলছে এই বছর প্রচুর পাঠ চাষ হয়েছে জাজিরায়, পরিমান প্রায় ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে পাটের।
শরীয়তপুর জেলায় সর্বাধিক পাটের আবাদ হয়ে থাকে জাজিরাউপজেলায়। বিগত বছরগুলোর তুলোনায় এ বছর পাট চাষে কৃষকদের গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। সকল পণ্যের বাজার মূল্য বৃদ্ধিতে বেড়েছে শ্রমিক ব্যয়, সাথে পাটের জন্য ব্যবহূত সারও বিক্রি হয়েছে গত বছরের তুলনায় বস্তা প্রতি অধিক মূল্যে।
এক বিঘা জমিতে ব্যবহূত হয় প্রায় ১ বস্তা ডিএপি, এতে গত বছরের তুলনায় কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা আর বস্তায় বেড়েছে ৩০০ টাকা। এছাড়াও ইউরিয়াসহ সকল দিক থেকে কৃষকদের গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের দাম কমেছে মন প্রতি ৬০০/৮০০ টাকা পর্যন্ত। এতেই মাথায় হাত জাজিরায় কৃষকদের। তবে কেউ কেউ বলছে গত হাটে তুলনামূলক দাম সামান্য বেশি ছিলো পাটের বাজার। তবে এ বছর লাভে বিক্রি হয়নি পাট।
হাটে পাট নিয়ে আসা কৃষক সালাউদ্দিন মোল্লা জানায়, আমি ১৫ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। তবে এ হাটে পাটের দাম দেখে হতাশ আমি। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের বাজার মূল্য কম। কৃষকের বিঘা প্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে এ বছর আমাদের কোন প্রকারই চালান আসছে না। বাজার অনুপাতে এখন মূল্য আছে ১৫০০ থেকে সর্বচ্চ ২৫০০ টাকা। তবে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলে হয়তো কৃষকরা কোন রকম বেচে খেয়ে থাকতে পারবে।
শরীয়তপুর জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা শংকর রঞ্জন সরকার জানান পাট সরকারিভাবে মূল্য নির্ধারণ করা হয় না। তাই এতে কিছু সমস্যা আছে। এলাকাভিক্তিতে পাটের দামটা উঠানামা করে। ফরিদপুর বা ওই দিকের পাট আমাদের শরীয়তপুরের পাটের তুলনায় উন্নত, তাই সেখানে তুলনামূলক দাম বেশি। ফরিদপুরের কানাইপুরে ২৫শ থেকে ২৬শ টাকা করে পাট বিক্রি হয় তবে এখানে টোটাল ২ হাজার টাকাও বিক্রি হয় না।
এবিষয়ে জাজিরা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার মো. জামাল হোসেন বলেন, আমরা বিজেআরআই তোষা পাট ৮ (রবি ১) ও জেআরও ৫২৪ জাতের পাট বেশি চাষ হয়। সেক্ষেত্রে গড়ে প্রতি বিঘায় ৮ মন করে পাট উৎপাদন হয়েছে। এসিজনের শুরুতে কিন্তু পাটের ভালো একটা দাম কৃষকরা পেয়েছে এবং এখনও প্রতিটি কৃষকের কাছে ভালো পরিমানের পাট মজুত রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যেটা করেছি কৃষি মেলায় ৩ হাজার লোককে বিনামূল্য বীজ বিতরণ করেছি।
সেই সাথে আমাদের যে পাট অধিদপ্তর রয়েছে তার মাধ্যমে ৩৩শ লোকের মাঝে বীজ এবং সার বিতরণ করেছি। এই ফলন যদি আমরা টিকিয়ে রাখতে পারি একই সাথে যদি কৃষক ভালো দাম পায় তাহলে এটা রপ্তানি করে দেশে বড় অংকের বৈদেশিক মুদ্রা বয়ে আনা সম্ভব।
টিএইচ