সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে চলমান বছরের গত জানুয়ারি থেকে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ছিল।
শিক্ষার্থীদের নতুন বছরের নতুন বই হাতে পাওয়ার পর থেকে পরিস্থিতির কারণে আরথাহ পাড়া, মুননুয়াম পাড়া ও বাসাত্লাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাসে এসে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়ে উঠেনি, পাশাপাশি শিক্ষকদেরও বিদ্যালয়ে এসে পাঠদান করার পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।
তবে প্রায় তিনমাস পর গত মঙ্গলবার বান্দরবানে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নে তিনটি বিদ্যালয় স্কুল খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।
আরথাহ পাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানরামলিয়ান বম বলেন, কেএনএফের সদস্যদের অবাধ বিচরণের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতা ও নিয়মিত টহলের কারণে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তাই গত মঙ্গলবার থেকে যথারীতি পাঠদান শুরু হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে আরথাহ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে। অলিফ বম (২৭) নামে এক অভিভাবক বলেন, তার তিন মেয়ে এ বিদ্যালয়ে পড়ছে। দুজন তৃতীয় ও চতুর্থ আরেকজন শিশু শ্রেণিতে। অস্থির পরিস্থিতির কারণে বড় মেয়েকে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চেয়েছিলাম কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। এখন বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হওয়ায় তার আর সম্ভব হবে না।
মুননুয়াম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত মঙ্গলবার কোনো শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন না। বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ১১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বসেছিলেন দপ্তরি চাতোয়ান বম। বাসত্লাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চলার কথা জানান প্রধান শিক্ষক তনকুং লুসাই।
রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা আশীষ চিরান বলেন, পাইন্দু ইউনিয়নের তিন বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পাঠদান শুরু হলেও রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের দুগর্ম কেরসপাই পাড়া, তামলৌ পাড়া, থাইক্ষ্যং পাড়াসহ আরও বেশ কয়েকটি পাড়ার বিদ্যালয়ে বিশেষ পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাজনিত কারণে পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষকরা আবার বিদ্যালয়ে ফিরে যাবেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রুমা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহরিয়ার ইকবাল বলেন, সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে কেএনএফ সদস্যদের বিতারিত করেছে। ফলে পাহাড়ে জঙ্গলে থাকা আরথাহ পাড়া, বাসাত্লাং পাড়া ও মুননোয়াম পাড়ার সাধারণ জনগণ নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন তাই ওই তিনটি পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানে কোনো সমস্যা হবে না। সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করতে সেনাবাহিনীর টহল দল নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানান এ সেনা কর্মকর্তা।
টিএইচ