বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

পাহাড়ের জুম চাষে পাকা ধানের সমারোহ

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি

পাহাড়ের জুম চাষে পাকা ধানের সমারোহ

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠির ঐতিহ্যবাহী চাষ পদ্ধতি ‘জুমচাষ’। যেই জুমচাষ প্রাচীন কাল থেকে অদ্যবধি পাহাড়ের প্রান্তিক পাহাড়ি জুমিয়ারা ঐতিহ্যগতভাবে করে আসছে। এবং এই জুমচাষের মাধ্যমে পাহাড়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বিভিন্ন সমপ্রদায়ের মানুষ জীবনধারণ করে আসছে। সাধারণত প্রতিবছরই জুমচাষ করে থাকে জুমিয়ারা।

প্রতিবারের মতো এবারও জীবনের তাগিদে জুমচাষিরা পাহাড়ে ধান, ভুট্টা, কাকন, হলুদ, মারফাসহ বিচিত্র রকমের ফসল চাষ করেছেন। তবে কিছু ফসল সারা বছর ধরে উত্তোলন হলেও বর্তমানে জুম ধান তোলার মৌসুম চলে এসেছে। যার ফলে পাহাড়ে পাহাড়ে গড়ে উঠা জুমচাষে এখন পাকা ধানের সমারোহ। পাকা ধানের মিষ্টি গন্ধে ভরে উঠেছে চারিদিক। বৃষ্টিসহ আবহাওয়া ঠিক থাকলে শুরু হবে ধানকাটা উৎসব।

রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন বিভিন্ন পাহাড়ী অঞ্চলে হয়ে থাকে জুমচাষ। সমপ্রতি উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়ন সংলগ্ন সীতাপাহাড় ও রামপাহাড়ের কিছু অংশে গিয়ে দেখা গেছে, পাহাড় ঘিরে হচ্ছে জুমচাষের সমারোহ। যেখানে সবুজ পাহাড় জুড়ে পাকা ধানের সোনালী রঙে ছেঁয়ে গেছে। এছাড়া পাকাধানের একটি মিষ্টি গন্ধে ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশ।

জুমচাষের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় জুমচাষী সুমেচিং মারমা জানান, তিনি দীর্ঘবছর ধরে পাহাড়ে জুম চাষ করে আসছেন। এই জুমচাষের উপর নির্ভরশীল তার পরিবার। তিনি জানান, সারাবছর কষ্ট করে জুমচাষ করার পর এখন ঘরে ফলন তোলার সময়। 

তবে গতবছরের তুলনায় এবার একটু বৃষ্টিপাত ভালো হওয়াতে ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু একটি সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে মাটির উর্বরতার কারণে সার ব্যবহার করা না হলেও এখন জুমে সার দিতে হয়। কেননা দিন দিন পাহাড়ের মাটির উর্বরতা কমে আসছে।

এদিকে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে জুমচাষ হয়ে থাকে। যেখানে ধানের পাশাপাশি আদা, হলুদ, মারফা, মরিচ, কচু, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টাসহ বিভিন্ন জাতের ফসলের চাষ করা হয়ে থাকে। 

এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইমরান আহমেদ জানান, কাপ্তাই কৃষিবিভাগ থেকে জুমচাষীদের ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন মিশ্র ফল, ফসল চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হয়ে থাকে। 

তবে জুম চাষীরা স্থানীয় জাতের ধানের চাষ করলেও কৃষিবিভাগ থেকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উচ্চ ফলনশীল ধানের ব্রি-ধান-৮৭ জাতের ধানের চারা রোপণের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি জানান, কাপ্তাইয়ের বেশকিছু এলাকার পাহাড়ে ভালো জুমচাষ হলেও চিৎমরম ইউনিয়ন এবং ব্যাঙছড়ি, সীতাপাহাড় এলাকার পাহাড়গুলোতে ভালো জুমচাষ হয়ে থাকে।

টিএইচ