ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীতে গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছেন ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট আক্তারুজ্জামান হাসু (৫৫)।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গ্রাহকরা ইসলামী ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখায় এসে জানতে পারেন, অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না করে এজেন্ট আক্তারুজ্জামান অভিনব কৌশলে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বোয়ালমারী পৌর সদর বাজারের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, প্রায় তিন বছর যাবত উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ভাটদী বাজারে ইসলামী ব্যাংকের আউটলেট নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। সমপ্রতি কয়েকজন গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দেখেন তাদের হিসাবে টাকা জমা হয়নি। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই ব্যাংকের কার্যালয়ে এসে তালাবদ্ধ দেখতে পান সাধারণ গ্রাহকরা। এসময় নিজেদের জমাকৃত টাকা নিজ নামের অ্যাকাউন্টে জমা না হওয়ায় অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
একাধিক গ্রাহক জানান, সারাদেশে ইসলামী ব্যাংকের সুনাম থাকায় নিজ এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে এফডিআর করেছিলেন তারা। গ্রাহকদের জমা টাকার রসিদের পরিবর্তে এজেন্ট তার একটি হিসাবের ব্যাংক চেক দিতেন গ্রাহকদের।
ব্যাংকটির গ্রাহক হেনা পারভীন জানান, গত জুলাই মাসের ২২ তারিখে ১২ লাখ টাকার একটি এফডিআর করেন। তখন তাকে জামান ট্রেডার্স নামে ইসলামী ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখার একটি হিসাবের ১২ লাখ টাকার চেক দেয়া হয়। এখন জানতে পারছেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা ওই টাকা জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।
ভাটদী বাজারে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম শাখাটির ক্যাশিয়ার মো. বাদশা মিয়া জানান, একাধিক গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর পালিয়েছেন মূল এজেন্ট আক্তারুজ্জামান হাসু। এজেন্ট আক্তারুজ্জামানের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ করেছি।
যখন আমি বুঝতে পারি গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে তখন মালিকের সঙ্গে কথা বলি। তিনি তখন জানান, আমি না থাকলেও আমার ভাই-বোন আছে, তারা টাকা পরিশোধ করে দেবে। আমাদের আউটলেটের প্রায় ৫০ জন গ্রাহকের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তিনি পালিয়েছেন। তার ফোন নম্বরও গত ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে আউটলেটের এজেন্ট অভিযুক্ত আক্তারুজ্জামান হাসুর মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুহিত শেখ বলেন, ভাটদী বাজারের আউটলেট জামান ট্রেডার্সের গ্রাহকরা এসেছিল, তাদের সঙ্গে এজেন্ট আক্তারুজ্জামান চেক দিয়ে কিছু লেনদেন করেছে, এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। বর্তমানে সে পলাতক। ইসলামী ব্যাংকের নাম করে যদি সে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টিএইচ