শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

ফরিদপুরে বেশি মজুরিতেও মিলছে না পাটকাটার শ্রমিক

ফরিদপুর প্রতিনিধি 

ফরিদপুরে বেশি মজুরিতেও মিলছে না পাটকাটার শ্রমিক

চলছে ধান লাগানো ও পাট কাটার মৌসুম। এ অবস্থায় শ্রমিক সংকটে পড়েছেন ফরিদপুরের কৃষকরা। অন্য সময়ের চেয়ে বেশি মজুরিতেও পাওয়া যাচ্ছে না শ্রমিক। ফরিদপুরে ‘জনের হাটে’ গিয়ে দেখা দিয়েছে এমন চিত্র।

শহরের পশ্চিম গোয়ালচামট এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই হাট। হাটটির মূল নাম ‘মিজান নগর কৃষাণ হাট’। স্থানীয়দের কাছে ‘জন হাট’ হিসেবে পরিচিত।

মূলত ফরিদপুরসহ অত্র অঞ্চলে শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকে। বিশেষ করে ফসল রোপণ ও কাটার সময়। সেই প্রয়োজন থেকেই গড়ে ওঠে হাটটি। হাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে চলছে পাট কাটা ও রোয়া ধান লাগানোর মৌসুম। প্রতিদিন গড়ে এ হাটে কমপক্ষে ৮০০ শ্রমিকের চাহিদা। কিন্তু গত কয়েকদিনের চলমান পরিস্থিতির কারণে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এই হাটে বেশিরভাগ শ্রমিক আসেন ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের অন্য জেলা থেকে।

এসব শ্রমিকদের নিয়ে যান ফরিদপুরসহ আশপাশের জেলা-মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুরের কৃষকরা। এই হাটকে ঘিরে শুধু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি, গড়ে ওঠেছে দোকানপাট। এসব দোকানে নাস্তা, দুপুরের খাবার, পুরোনো জামা-কাপড়, কৃষি কাজের কাচি, দা, নিড়ানিসহ নানা সরঞ্জাম বিক্রি হয়। তবে বর্তমানে মানুষ কম থাকায় দোকানগুলো প্রায় ক্রেতা শূন্য।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে হাটটিতে যেখানে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের আনাগোনা থাকে, সেখানে এখন দুইশর মতো মানুষের আনাগোনা। তাও শ্রমিক নিতে আসা মানুষের সংখ্যা বেশি।

শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই কারফিউয়ের আগে কাজে গিয়েছিলেন। তবে কাজ শেষ হলেও যানবাহন না চলায় তারা আর হাটে ফিরতে পারেননি। ওই কয়দিন গৃহস্থের বাড়িতেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল তাদের।

সালথা থেকে শ্রমিক নিতে আসা গৌতম মণ্ডল বলেন, এখন পাট কাটার পুরো মৌসুম। এলাকায় জন (শ্রমিক) নেই। তাই হাটে এসেছি জন নিতে। হাটে শ্রমিক কম। মাত্র দুজন পছন্দ হয়েছে তাও দাম (মজুরি) বেশি।

ঝিনাইদহ থেকে শ্রম বিক্রি করতে আসা শাহিদ মোল্লা বলেন, ১০ দিন আগে ভাঙ্গার এক গেরস্তের বাড়িতে কাজ শেষ করে আবার হাটে এসেছি নতুন কাজের খোঁজে। তবে হাটে শ্রমিকের সংখ্যা কম।

পৌরসভা থেকে ইজারা নিয়ে এ হাট পরিচালনা করেন মো. বাবু শেখ। প্রতিজন শ্রমিকের কাছ থেকে ১০ টাকা করে নেন তিনি।

বাবু শেখ বলেন, বর্তমানে হাটে শ্রমিকের সংকট। শ্রমিক কম থাকায় তাদের মজুরি চড়া। অনেক গেরস্ত পাঁচশো টাকার শ্রমিক ৭০০-৮০০ টাকায় কিনে নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, কারফিউতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় যেসব শ্রমিক গৃহস্থের বাড়িতে আটকা পরেছিলেন তারা অনেকেই বাড়ি চলে গেছেন।

টিএইচ