শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

ফুলের চারা বিক্রি করে কলেজছাত্রের মাসিক আয় লাখ টাকা

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি

ফুলের চারা বিক্রি করে কলেজছাত্রের মাসিক আয় লাখ টাকা

এসএসসি পাশ করে কলেজছাত্র ইমরান আহাম্মেদ। এই শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই সারাদেশে অনলাইনে বিক্রি করেছে দেশি বিদেশি বিভিন্ন ধরণের ফুলের চারা। 

একতলা বাড়ির ছাদে চাষ করা এসব ফুলের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে পঞ্চাশ থেকে এক লাখ টাকার বাণিজ্য করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এ শিক্ষার্থী। ইমরান আহাম্মেদের দাবি তার সংগ্রহে ফরমোসা ব্লাক পায়েল নামের কালো জবাসহ বিদেশি কয়েক প্রকার ফুলের চারা সংগ্রহে রয়েছে, যা দেশে আর কারও কাছে নেই।

সম্প্র্রতি শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শাবনুর মার্কেট এলাকায় ইমরানের ছাদ বাগানে দেখা যায় দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় এক হাজার পাঁচশ প্রকার ফুলের চারা। এসব চারার অধিকাংশ ইমরান আহাম্মেদ ভারত থেকে সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছে আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদক নয়ন দাসকে।

শরীয়তপুরের মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও প্রবাসী আবুল বাসার কাজীর ছেলে ইমরান আহাম্মেদের লক্ষ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জবা ফুলের প্রজেক্ট করা। এছাড়াও জবা ফুল ব্যতিত এডেনিয়াম ও বাগান বিলাসের আরও দুটি প্রজেক্ট খুব শিগগিরই গড়ে তুলবে সে।

উদ্যোক্তা ইমরান আহাম্মেদ বলেন, যখন আমি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করি তখন প্রথমে একটি বেলী ফুলের চারা রোপণ করি। ওই চারা বড় হয়ে যখন ফুল ফুটেছিল তখন অনেক আনন্দ পেয়েছিলাম।

বেলী ফুল ফোটার আনন্দ আমাকে আরও বেশি উৎসাহিত করে ফুলের চারা রোপণ করতে। এরপর ফুলের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির উঠোনসহ যেখানে একটু খালি জায়গা পুোম সেখানেই ফুলের চারা রোপণ করতাম।

ক্ষুদে উদ্যোক্তা এই শিক্ষার্থী আরও বলে, হাত খরচ যোগানোর জন্য একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে চারা বিক্রি করা শুরু করলাম। চারা বিক্রি থেকে আমার অনেক টাকা আয় হয় ওই সময়। এছাড়াও আমি গ্রাফটিং করে চারা উৎপাদন করি। গ্রাফটিং থেকে চারা উৎপাদন হতে সময় লাগে তিন থেকে পাঁচ মাস। 

দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় লক্ষ্য করলাম বাংলাদেশে জবা ফুলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান, ব্যাঙ্গালেরু, ট্রপিক্যালসহ অন্য জবা ফুল। কিন্তু দেশে তখন এসব ফুলের চারা পাওয়া যেত না। 

দেশে জবার চাহিদা বেশি থাকায় আমি আমার পরিচিত এক ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতের কলকাতা থেকে জবার বিদেশি এসব প্রজাতির খয়েরী, হলুদ, লাল, কালো, গোলাপীসহ প্রায় তিন শতাধিক রঙের জবার চারা সংগ্রহ করি। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে নিজে পরিচর্যা করে চারা উৎপাদন করে দেশের ৬৪ জেলায়ই এসব চারা বিক্রি করেছি দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়।

শরীয়তপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বেপারী বলেন, সদ্য মাধ্যমিক পাস করা একটি ছেলে ফুলের চারা বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করে, এটা আশ্চর্যের বিষয়। কেউ যদি ভালো কাজে সময় ব্যয় করে তাহলে সাফল্য আসবেই। দেশের শিক্ষার্থী ও বেকার যুবকদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে ছোট্ট ইমরান। 

টিএইচ