ফেনীতে গত বর্ষায় শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগে এবারও বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। গত বছরের বন্যায় জেলার সবকটি উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যায় ২৯ জনের প্রাণহানি হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।
২০২৪ এর আগস্টে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর ১০২টি স্থানে বাঁধ ভেঙে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিলো পুরো ফেনী জেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন ১০ লক্ষাধিক মানুষ। ভেঙে যাওয়া সে বাঁধগুলো মেরামত কাজ চললেও স্থানীয়রা বলছেন কাজ হচ্ছে দায়সারাভাবে। পানির চাপ পড়লে এ বাঁধ আবারও ভেঙে যাবে।
তারা আরও জানান, গত ৭ বছরে বাঁধ মেরামতে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এমন গতানুগতিক সংস্কার প্রতিবছরই হয়। আবার সংস্কার করা স্থান ভেঙে নিমজ্জিত হয় লোকালয়। বাঁধ মেরামতে এবারও ব্যতিক্রম কিছু দেখছেন না তারা। এ কারণে আবারও বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন তারা। গত বর্ষা মৌসুমে পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজ কালিকাপুর সীমান্তের শূন্যরেখায় বল্লামুখার ভারতীয় অংশের বাঁধ কেটে দিয়েছিলো বিএসএফ।
এতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। বাঁধের এক প্রান্তে কাজ হলেও অপর প্রান্তের কাজ এখনও হয়নি। জটিলতা রয়েছে সীমানার। বাঁধটি মেরামত করা না গেলে আবারও সেসব স্থান দিয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ২০২৪ এর ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি নিরূপণে কৃষিখাত, সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষাপপ্রতিষ্ঠান, মোটরযান, ঘরবাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ২০ লাখ ৫০০ টাকা। আর প্রাণহানি হয়েছে ২৯ জনের।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ফেনীর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, বাঁধ মেরামতের নামে হরিলুট প্রতিবারই হয়। এবারও মেরামত কাজ চলছে। তবে মানুষের মুক্তিতো নেই।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার জানান, বাঁধের মেরামত কাজ চলছে। আশা করা যায় বর্ষা মৌসুমের আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বাঁধায় একটা অংশে মেরামত করা যায়নি। সে বিষয়েও জোর চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
টিএইচ