শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post
নিয়ন্ত্রণহীন কিশোর গ্যাং

ফেনীতে ঘটাচ্ছে খুন ছিনতাই অপহরণসহ নানা অঘটন

ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীতে ঘটাচ্ছে খুন ছিনতাই অপহরণসহ নানা অঘটন

ফেনী জেলা  শহরের পাড়া-মহল্লাসহ গ্রামাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে কিশোর গ্যাং। সব শ্রেণির মানুষের কাছে তারা এখন আতঙ্কের নাম। তাদের অত্যাচারে ভীত-সন্ত্রস্ত সাধারণ মানুষ। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও তারা নানা অঘটন ঘটাচ্ছে। 

খুন, ছিনতাই, অপহরণসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী তৎপরতার পরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কিশোর অপরাধীদের।
দু’একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িতদের গ্রেপ্তার করলেও দল ভারী করতে কথিত বড় ভাইরা এসব কিশোরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন। সন্তানদের বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন রয়েছেন অভিভাবকসহ সচেতন মহল।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র ও একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের প্রায় প্রতিটি স্কুলেই রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রুপ। তারা প্রতিদিন বিকালে পাড়ার মোড়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা বাড়ির প্রবেশমুখে দল বেঁধে অবস্থান নেয়। 

এর মধ্যে শহরের মিজান রোডের ফজল মাস্টার লেনের আলিয়া মাদ্রাসার নির্মাণাধীন নতুন ভবনের সামনে, শান্তি কোম্পানি রোড, ফালাহিয়া মাদ্রাসা, পাঠানবাড়ি, কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকার আয়কর অফিসের আশপাশ, সালাহউদ্দিন মোড়, পুলিশ কোয়ার্টার, শাহীন একাডেমি, রামপুর, পশ্চিম উকিলপাড়া, সেন্ট্রাল হাই স্কুল, ডাক্তারপাড়া, মাস্টারপাড়া এলাকায় তাদের দৌরাত্ম্য বেশি। শুধু ছেলেরাই নয়, মেয়েদের একাধিক গ্যাংয়ের তৎপরতাও ইতোমধ্যে নজরে এসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের শান্তি কোম্পানি সড়ক ও মিজান রোডের বিভিন্ন চা-দোকানের ভেতর কিশোরদের আড্ডাবাজি চলছে। রাস্তার পাশে দোকানগুলো থেকে চলাচলরত স্কুলছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আড্ডাবাজ এসব কিশোর। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির সময় গেটে দাঁড়িয়ে দল বেঁধে আড্ডা দেয় তারা।

গত ৩০ জুন ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর বাজারে বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় রবিউল হক সাহেদ নামে একজনকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

এর আগে শহরের মডেল হাই স্কুলের এক ছাত্রকে ধরে নিয়ে ডাক্তারপাড়ায় বেধড়ক পেটায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে র্যাবের অনুসন্ধানে ২২টি কিশোর গ্যাংয়ের নাম বেরিয়ে এসেছে।

ফেনী র্যাব-৭-এর স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম জানান, গ্যাং কালচার প্রতিরোধে তারা নিয়মিত টহল অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে গেলেও তারা সরে পড়ে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

টিএইচ