ফেনীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার (২৬ নভেম্বর) রাতে শহরের মিজানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাহেদ আকবর অভি ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক আশ্রাফ হাসান মোহনের অনুসারীদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবিনের অনুসারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় সাহেদ-মোহনের অনুসারী হামজা, রাহিম, শিহাব, অভিসহ ৭/৮ জন ও রবিন অনুসারীদের ৭/ ৮ নেতাকর্মী আহত হয়।
এদের মধ্যে সাহেদের অনুসারী আরিয়ান অন্তুকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।অন্যরা বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
ছাত্রলীগ কর্মী শাহাদাত হোসেন জানান, ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতালের বিপরীত পার্শ্বের রাস্তায় ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মী নিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলো।
এসময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক রবিউল হোসেন রবিনের নেতৃত্বে ৫০/ ৬০ জন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
তার দাবি, ফেনী সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারদীন, ক্রীড়া সম্পাদক নোমান, পৌর ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান, সদস্য শাফিন, প্রবাল মাহিসহ ৫০/ ৬০ জন দেশীয় অস্ত্র হাতে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
মেহেদী হাসান বাপ্পি নামে আপর এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, রবিনের নেতৃত্বে ওই হামলা হয়েছে। এলাকায় বহিরাগতদের হামলার কথা শুনে ঘটনাস্থলে হামলাকারীদের একজনকে ধরে পুলিশে দিলেও পুলিশ তাকে ছেডে দিয়েছে।
ফেনী পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আশ্রাফ হাসান মোহন বলেন, বিকালে অভি নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করে জেলা ছাত্রলীগ নেতা রবিনের অনুসারীরা। বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে অভির সহকর্মীরা নাজির রোড এলাকায় গেলে উল্টো তাদেরকেই পাকড়াও করা হয়। এরপর রবিনের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন অস্ত্রধারী মিজান রোড এলাকায় এসে আমার ছোট ভাইদের ওপর হামলা করে। এতে প্রায় ১০/১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়।
তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবিন বলেন, সংঘর্ষের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম এটা সত্য নয়। তবে ফেনী সরকারি কলেজ মাঠ, পাঠানবাড়ি সড়ক, ও নাজির রোড এলাকায় একাধিকবার আমার ছোট ভাইদের ওপর ওরা হামলা করেছে। যার প্রেক্ষিতে মিজান রোডে দুই পক্ষের ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। এসময় আমাদের ৭/ ৮ জন আহত হয়েছে।
ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাহেদ আকবর অভি জানান, সংঘর্ষের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। একজন ছাত্রলীগ নেতা গুরুতর হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তির খবর শুনে তাকে দেখতে এসেছি। আমার অনুসারী বা গ্রুপ কথাটা সত্য নয়।
এসময় যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এক পক্ষের দুজন আহত হওয়ায় তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিএইচ