ফেনী নদী থেকে বছরের পর বছর বালু তোলায় জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ও ঘোপাল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে বসতবাড়ি, মসজিদ ও কবরস্থান। পরিত্রাণ পেতে ভুক্তভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানালেও ফল হয়নি।
গত রোববার ভাঙন পাড়ে মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত শত শত নারী-পুরুষ। সরেজমিনে দেখা গেছে, শুভপুর ব্রিজের অদূরে নদী থেকে শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে শক্তিশালী খননযন্ত্র দিয়ে দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন করা হয়। এতে করে জয়পুর, লাঙ্গলমোড়া ও কাটাপশ্চিম জোয়ার এলাকার দেড় হাজার একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এসব জমিতে আমন, ফেলন, তরমুজ, বাদাম ও শস্য আবাদ হতো। এছাড়া কয়েক গ্রামের হাজার হাজার একর ফসলি জমি, কবরস্থান ও মসজিদ এবং বসতবাড়ি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীর তীরবর্তী এসব ফসলি জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ করেন কৃষকরা। উত্তোলন করা বালু কার্গোতে করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়।
লাঙ্গলমোড়া এলাকার আমিন হাজী বাড়ির বাসিন্দা ডা. নুরুল আমিন হেলাল জানান, বালু তোলার কারণে ১০ শতাংশ ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। বিশাল এলাকাজুড়ে ভেঙে নদীর গতিপথও পরিবর্তন হয়ে গেছে। প্রতিদিনই ভাঙছে। আরো ২৯শতাংশ জমি রয়েছে। সেটাও হুমকির মুখে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের মুহুরী সেচ প্রকল্পের স্কিম ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন জানান, ফসল আবাদের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করেছিলেন। সেটি বালু কারবারিরা ফেলে দিয়ে বালু তুলেছে। শুধু তাই নয়, প্রকল্পের পাইপও তলিয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত বছরের ২৫ অক্টোবর ডা. নুরুল আমিন হেলাল, এনামুল হক, আবুল কালাম, সাজেদুল করিম, দেলোয়ার হোসেন, ফজলুল করিম, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. সুমনসহ এলাকার বেশ কিছু ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারকে দেয়া হয়। ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার সাক্ষরিত ওই প্রস্তাবনা ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার। তিনি বলেন, বালু তোলার কারণে পাশবর্তী অনেক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ধরনের অভিযোগ পাওয়ার পর বালু উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
টিএইচ