বাগেরহাটের কচুয়ার বাধাল, রাড়িপাড়া, গোপালপুর এবং মোরেলগঞ্জের বনগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় ৪০টির গ্রাম পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। খননের জন্য মোরেলগঞ্জের বিষখালি নদীতে বাঁধ দেয়ার কারণে পানি প্রবেশ করতে না পারায় ওসব এলাকার খাল ও পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে।
পানির অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মাছ ও ধান চাষীসহ স্থানীয়রা। প্রায় চার-পাঁচ মাস ধরে চলা এই পানি সংকট নিরসনে ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ধর্না দিয়েও কোন লাভ হয়নি।
বাধ্য হয়ে বুধবার (১৩ মার্চ) কচুয়ার বাধাল, গোপালপুর, মোরেলগঞ্জের বনগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শতশত নারী পুরুষ এক হয়ে বলেশ্বর এবং বিষখালী নদীর সংযোগস্থল কচুয়া উপজেলা অংশে দেয়া বাঁধ কাটতে শুরু করেন।
স্থানীয় বাধাল ইউপি চেয়ারম্যান নকিব ফয়সাল অহিদ, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি কোতয়াল ইলিয়াস আলী, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গন্যমান্য ব্যক্তিরাও অংশগ্রহণ করেন। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় বাঁধ কেটে পানি প্রবেশ স্বাভাবিক করতে সক্ষম হন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সুজন শেখ বলেন, দেড়-দুই মাস ধরে শুধু বাঁধ কেটে পানি ঢুকানোর আশ্বাস দেয় ঠিকাদারের লোকজন। কিন্তু বাঁধও কাটে না, পানিও ঢুকায় না। আবার কাজ শেষ হওয়ারও লক্ষণ নেই। আমরা এক ধরনের বাধ্য হয়ে সবাই মিলে বাঁধ কাটতে আসছি।
এদিকে হঠাৎ করে বাঁধ কেটে দেয়ায় খনন কাজে কিছুটা সমস্যা হবে দাবি করে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মাদ আল-বিরুনী বলেন, বাঁধ কাটার বিষয়টি জানতাম না। পরে জেনেছি। হঠাৎ করে বাঁধটি কাটায় খনন কাজে খুব সমস্যা হবে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা দূরহ হবে বলে জানান তিনি।
জেলার মোরেলগঞ্জ ও কচুয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মৃত প্রায় বিষখালি নদীর ২৩.৩৭ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গতবছরের অক্টোবরে খনন শুরু হয়। নির্বিঘ্নে খনন কাজ সম্পন্ন করতে তখন থেকেই বিষখালী নদীর বাধাল, পূর্ববিষখালীসহ কয়েকটি জায়গায় একাধিক বাঁধা দেয়া হয়। যার ফলে ৪০টির গ্রাম পানিশূন্য হয়ে পড়ে।
টিএইচ