ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও বাংলাদেশের প্রায় বেশির ভাগ মানুষই ধূমপান করে থাকেন বিশেষ করে বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট। আসন্ন জুন মাসে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের আগেই রংপুর ও লালমনিরহাটে সব ধরনের সিগারেটের দাম বেড়েছে।
ফলে রংপুর থেকে শুরু করে লালমনিরহাট পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষুদ্র মুদির দোকানে সিগারেট সময়মতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা যায়। ইতোমধ্যে খুচরা বাজারে সব সিগারেটের শলাকা প্রতি দাম বেড়েছে এক থেকে ২ টাকা পর্যন্ত। আসন্ন বাজেটে সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্যের দাম বাড়বে কী বাড়বে না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। কিন্তু তার আগেই বাজারে বেড়ে গেছে সিগারেটের দাম।
লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় এলাকার ক্ষুদ্র একজন পান সিগারেটের দোকানদার আফজাল হোসেন বলেন, ডিলার থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সব সিগারেটের বাড়তি দাম রাখতে শুরু করেছেন। দোকানে সিগারেট সেবন করতে গিয়ে লালমনিরহাট শহরের এলজিইডি বটতলা এলাকার বাসিন্দা জামাল বাদশা দাবি করেন বলেন, দোকানদার ধূমপায়ীদের কাছে বাড়তি মূল্যে সিগারেট বিক্রি করছে।
আগামী বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের দাম বাড়ার কথা শোনা যাচ্ছে বলেই সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, তিনি আরও বলেন আমি যেহেতু একজন সংবাদকর্মী তার কারণেই আমি এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি নানা প্রাপ্তবয়স্ক ক্রেতা-বিক্রেতারা কাছ থেকে।
প্রতি বছরই জাতীয় বাজেটে বাড়ানো হয় তামাকপণ্যের দাম। আর এ কারণেই বাজেট ঘোষণায় আগেই সিন্ডিকেট করে সিগারেটের দাম বাড়িয়ে দেন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটররা। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাজেটে দাম বাড়বে এ আশায় সিগারেট দিচ্ছে না সিন্ডিকেট ডিস্ট্রিবিউটরা এমন দাবি খুচরা বিক্রেতা নাজমা স্টরের মালিক মোহাম্মদ রেজাউল ইসলামের।
তিনি আরও বলেন, আমার মতো শত শত খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, গত এক থেকে দুই সপ্তাহ কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটররা সিগারেট সরবরাহ করছেন না ঠিকমতো। তাই বাধ্য হয়ে ডিলারদের কাছ থেকে আগের দামের থেকে বেশি দামে সিগারেট কেনার ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির ফলে রংপুর ও লালমনিরহাটসহ সারা দেশের নানা প্রাপ্ত বয়স্কদের ধূমপান করতে হলে সিগারেট কিনতে হবে বেশি দামে।
লালমনিরহাট মিশন মোড় এলাকায় বাসিন্দা ফিরোজ আলী সিগারেট সেবনের জন্য দোকানে কিনতে গিয়ে সিগারেট কেনার পর সংবাদকর্মীকে অভিযোগ করে বলেন, প্রতি শলাকা বেনসন সিগারেট এক থেকে ২ টাকা বেড়ে এখন ১৮ টাকা নিচ্ছে, আর গোল্ডলিফ এক টাকা বেড়ে ১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কিন্তু অনেক সময় ভাংটি ১ টাকা না থাকার কারণ কে দায়ী করে ২ টাকা নেয়া হচ্ছে।
আগে যে মার্লবোরো সিগারেট প্রতি শলাকা ১৬ টাকায় বিক্রি হতো বা আমরা কিনতাম, এখন তা বেড়ে ১৭ টাকা হয়েছে। তবে রয়েল, ডার্বি, হলিউড আগের দাম ৫ টাকায় বিক্রি হলেও কিছু কিছু জায়গায় ৬ টাকা পর্যন্ত। শহর ছেড়ে গ্রামের মুদি দোকানের আরও করুন অবস্থা, কারণ পরিবহন ব্যবস্থা ও ডিস্ট্রিবিউট জনবল কম থাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো পাচ্ছে না সিগারেট। ডিলার থেকে অল্প পরিসরে সিগারেট ক্রয় করে তারা বেশির থেকে ও বেশি দামে বিক্রি করছে।
আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে আর এই সময় সাধারণত তামাকপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। এ কারণে রংপুর লালমনিরহাট কুড়িগ্রামসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে জানা যায় এবং দেশের অন্য জেলাগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রায় সারা দেশে এবার বেশ আগেভাগেই সিগারেটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটররা।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্রেতারা বলেন, গত বছর বাজেটের দুই-তিন দিন আগে দাম বেড়েছিল। কিন্তু এবার অনেক আগেই সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারাই বাজারে তৈরি করছেন কৃত্রিম সংকট।
টিএইচ