দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক যুবক, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এক শিশু, বগুড়ার নন্দীগ্রামে একজন ও নীলফামারীতে ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ফখরুল ইসলাম (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) শেখ কামাল সেতুর উপর এ ঘটনাটি ঘটে। নিহতের সাথে থাকা জাতীয় পরিচয় পত্র থেকে জানা গেছে, তিনি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার খায়েরগাঁও, আকুপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম আজির উদ্দিন। দুর্ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কেউ জানাতে পারেনি। তবে উদ্ধারকারী পথচারীরা জানান, নিহত ফখরুল শেখ কামাল সেতুর উপর ছিল। এসময় ঢাকাগামী পরিবহনের সাথে ধাক্কা লেগে তিনি গুরুত্বর আহত হন। পথচারীরা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে এর কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কলাপাড়া থানার ওসি আলী আহম্মেদ জানান, নিহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। মরদেহ মর্গে প্রেরণ করা হবে।
পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল মিম নামের এক চার বয়সী শিশুর। শনিবার (১৮ নভেম্বর) তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা জাতীয় মহাসড়কের ধামনাগছ এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত মিম উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কাটাপাড়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে। স্থানীয় ও স্বজনরা জানায়, শনিবার (১৮ নভেম্বর) আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে পাওয়া নানা সায়েদ আলীর ঘর আগুনে পুড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে মায়ের সঙ্গে দেখতে আসে মিম। শনিবার (১৮ নভেম্বর) নানা বাড়ি থেকে মহাসড়কে উঠে পার হওয়ার সময় বাংলাবান্ধাগামী একটি মালবাহী লরির তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তেঁতুলিয়া হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করলে পঞ্চগড়ে নেয়ার পথে মিম মারা যায়। এ ঘটনায় মালবাহী গাড়িটি আটক করেছে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশ। তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা এসআই ফরহাদ হোসেন ও বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান তারেক হোসেন মালবাহী লরির ধাক্কায় শিশু মিমের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন।
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : বগুড়ার নন্দীগ্রামে মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানের পেছনে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় চালক নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের ওপর কাভার্ডভ্যান রেখে চালক ও হেলপার ঘুমাচ্ছিলেন। অসাবধানতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) নন্দীগ্রাম পৌর সদরের কালিকাপুর ফরিদ ভলকানাইজিং এলাকার মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক ভরত চন্দ্র বর্মন (৩০) নিহত হন। সে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার নওটিকা গ্রামের শীতল চন্দ্র বর্মনের ছেলে। তার সহকর্মী আহত আলামিন (২৫) একই উপজেলার কেশরতা উত্তরপাড়ার আব্দুল গফুরের ছেলে। জানা গেছে, তারা ব্যবসার কাজ শেষে মোটরসাইকেলযোগে নাটোর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানের পেছনে চলন্ত মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন চালক ভরত চন্দ্র। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা আলামিন ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার ওসি মো. আববাস আলী জানান, দুর্ঘটনার ব্যাপারে সড়ক পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মোটরসাইকেল চালকের মরদেহ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
নীলফামারী : নীলফামারীর ডোমারে মোটরসাইকেলের সাথে দাঁড়িয়ে থাকা ধান মাড়াই মেশিনের ধাক্কায় রুমন ইসলাম (২২) নামে মোটরসাইকেল চালক এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলে থাকা দুইজন আরোহী। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার ধরনীগঞ্জ বাঁশের পুল এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রুমন ইসলাম পশ্চিম চিকনমাটি আরডিআরএস মোড় এলাকার কাঁচামাল ব্যবসায়ী বুলেট ইসলামের ছেলে ও সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আহতরা হলেন, পশ্চিম চিকনমাটি আরডিআরএস মোড় এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে মো. জনি (২৬) এবং ডাঙ্গাপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসনের ছেলে রতন ইসলাম (২১)। প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিসের সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী থেকে তিন যুবক মোটরসাইকেলে ডোমারের উদ্দেশ্য আসার পথে বাশের পুল এলাকায় দাড়িয়ে থাকা ধান মাড়াই মেশিনের সাথে ধাক্কা লাগলে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়েন মোটরসাইকেল আরোহীরা। এতে তারা গুরুতর আহত হলে ডোমার ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায় রুমন। আহত ২ জন ডোমার উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডোমার থানার ওসি মাহমুদ উন নবী বলেন, এ ঘটনায় ধান মাড়াই মেশিনটি থানায় আটক করা হয়েছে।
টিএইচ