বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় চয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নরসিংদীর পলাশে দুই চালক, কুড়িগ্রামে ২ শিক্ষার্থী, গাজীপুরে একজন ও রাজবাড়ীতে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—
পলাশ (নরসিংদী) : নরসিংদীর পলাশের ঘোড়াশাল-পাঁচদোনা সড়কে এনা পরিবহনের যাত্রীবাহি বাস ও কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখী সংঘর্ষে দুই পরিবহনেরই চালক নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে আরো ৬ জন। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ তথ্য জানিয়েছেন ঘোড়াশাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. নাইবুল ইসলাম। নিহত এনা পরিবহনের চালকের নাম মো. ইদ্রিস আলী। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জে। নিহত কাভার্ডভ্যানের চালক ও আহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এনা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস ভোরে ঘোড়াশাল পাঁচদোনা সড়কের ভাগদী কদমতলা নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কার্ভাডভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই এনা পরিবহনের চালক মো. ইদ্রিস আলী ও কাভার্ডভ্যানের চালক নিহত হয়। গুরুতর আহত হয় আরো ৬ জন। তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম সদরে মোটরসাইকেল ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাদমান সাদিক নামের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয় মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা নিহত সাদমানের বন্ধু হিমু। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কুড়িগ্রাম ধরলা ব্রিজ পশ্চিম পাড়ের কাছে ট্যানারি পাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নিহত সাদমান পৌর শহরের পলাশবাড়ী বানিয়া পাড়া গ্রামের ঠিকাদার আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে। সে আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী বলে জানা গেছে। সাদমানের বন্ধু হিমু কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন স্কুলের শিক্ষার্থী। সে ভেলাকোপা গ্রামের শিক্ষক মো. নুর ইসলামের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার দিকে শহরের ট্যানারি পাড়া এলাকায় ভুরুঙ্গামারী থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেলটি ভিতরে ঢুকে পরে। এ সময় মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়। পরে ট্রাকের ভিতর থেকে মোটরসাইকেলের দুই আরোহীকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন স্থানীয় লোকজন।
হাসাপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদিক নামের এক কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে হিমুকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। চালক পালিয়ে গেছে, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ময়লা ফেলার গাড়ির চাপায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের কুনিয়া বড়বাড়ি এলাকায় শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক নারীশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা বের হয়ে এসে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা বেশ কিছু যানবাহন ভাঙচুর করেছেন, ময়লা ফেলার গাড়ির সামনের অংশে আগুনও ধরিয়ে দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই এলাকার বেশ কিছু পোশাক কারখানায় আজকের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সকালে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা কাজে যাচ্ছিলেন। কুনিয়া বড়বাড়িতে সড়ক পার হওয়ার সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ময়লা ফেলার একটি গাড়ি এক শ্রমিককে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ সময় আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ইট-পাটকেল ছুড়ে অন্তত ১৫-১৬টি যানবাহনের কাচ ভাঙচুর করেন। পরে সিটি করপোরেশনের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। খবর পেয়ে থানা-পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। নিহত নারী শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ওসি শাহ আলম জানিয়েছেন, শ্রমিকদের বুঝিয়ে নিবৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে শ্বশুরকে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে আসার সময় বাসের ধাক্কায় খালেদা আক্তার নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের রস্করদিয়া গ্রামের প্রবাসী চাঁন মিয়ার স্ত্রী। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের সদর উপজেলার বাগমারা ছোট মোড় এলাকায় এ দুঘর্টনা ঘটে। প্রতিবেশী পপি বেগম বলেন, ওই গৃহবধূ তার শশুরকে ডাক্তার দেখানোর জন্য অটোবাইক যোগে রাজবাড়ী শহরের দিকে আসছিলেন। এ সময় রাবেয়া পরিবহনের একটি বাস অটোবাইককে ধাক্কা দিলে সড়কের উপর পরে যায় ওই নারী। তাকে চাপা দিয়ে বাসটি পালিয়ে যায়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পাংশা হাইওয়ে থানার এসআই উৎপল কুমার বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ঘাতক বাসটি আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
টিএইচ