বেতন বাড়ানোর দাবিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলমান আন্দোলনে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ও মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে পোশাক শ্রমিকেরা। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক বাজার এলাকায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা মহাসড়কে চলাচলকারী ১০-১২টি যানবাহন ভাঙচুর করে। শিল্প পুলিশ ও জেলা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এতে আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে।
পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরে উপজেলার কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক বাজার এলাকায় অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময়ে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। শ্রমিকেরা ফাঁড়ির প্রবেশ গেট, ফাঁড়ির জানালার গ্লাস এবং সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. সানোয়ার হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, ‘শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন আজ অব্যাহত আছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। কালিয়াকৈরে মৌচাক ফাঁড়ি এলাকায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা অবস্থান নিয়েছে।’ তবে পুলিশ ফাঁড়িতে ভাংচুরের বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, ‘কয়েক হাজার শ্রমিক মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা অব্যাহত আছে ।’
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা বলছে, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিচালা এলাকা থেকে শ্রমিক আন্দোলনের শুরু হয়। ওই দিন স্থানীয় পাঁচটি কারখানার শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ শুরু করে।
পরে শ্রমিক বিক্ষোভ গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থেকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, নাওজোর, ভোগড়া, চান্দনা চৌরাস্তা, কলম্বিয়া এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয় শ্রমিকেরা। গাজীপুর মহানগর নলজানী, চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া, বাসন সড়ক এলাকায় শ্রমিকেরা অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শিল্প পুলিশ, মহানগর পুলিশ ও জেলা পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি র্যাবের টহল চলছে।
গাজীপুরের কাশিম পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘শ্রমিকেরা বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে মিছিল করছেন। আজকে অধিকাংশ কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের সংখ্যা কিছুটা কম। তাঁদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
টিএইচ